সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি দেশটির প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের প্রাক্কালে তার এই সফর বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। খবরটি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি।
মঙ্গলবার জেদ্দায় ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দেশটির কর্মকর্তারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংশ নেবেন। মূলত, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করাই এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।
ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির মতবিরোধ হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে সেই সম্পর্ককে পুনরায় স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে।
সৌদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জেলেনস্কির জেদ্দায় পৌঁছানোর খবর জানানো হয়। জানা গেছে, তিনি ইফতারের পর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দেশটির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রেই ইয়ারমাক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই সিবিহা এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’ও জেদ্দার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। তবে জেলেনস্কির সঙ্গে তার সরাসরি সাক্ষাতের সম্ভাবনা কম। রুবিও যুবরাজ মোহাম্মদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় বসতে আগ্রহী কিনা এবং তারা কী ধরনের প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারে, সে বিষয়ে জানতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা জানতে চাই, তারা কোনো ধরনের শান্তি আলোচনায় বসতে আগ্রহী কিনা। সেই আলোচনার রূপরেখা কেমন হতে পারে, সে সম্পর্কে তাদের ধারণা কী। ইউক্রেনীয়দের জন্য এটি অত্যন্ত কঠিন এবং রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে এবং তারা অনেক ভুগেছে। এমন পরিস্থিতির পর ছাড়ের বিষয়ে কথা বলা কঠিন, তবে এটাই সম্ভবত এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারে এবং আরও দুর্ভোগ এড়াতে পারে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্প্রতি ইউক্রেন ইস্যুতে তাদের অবস্থান আরও জোরালো করেছে। তারা মহাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে এবং নিরাপত্তা খাতে কয়েকশ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও, দেশটির প্রতিরক্ষামূলক কাজে প্রয়োজনীয় গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর আক্রমণাত্মক কাজে ব্যবহারের জন্য গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া এখনো স্থগিত রয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একজন মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সৌদি আরবে হতে যাওয়া বৈঠকে ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান পুনরায় চালুর বিষয়ে অগ্রগতি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস