কানাডার রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসন্ন। দেশটির লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার মার্ক কার্নি।
এই পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে কানাডা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেন কার্নি। খুব শীঘ্রই দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে মিলিত হন কার্নি। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভের পর ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। কার্নি প্রায় ৮৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন, যা দলীয় নেতৃত্বের নির্বাচনে গত কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম বড় জয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক বর্তমানে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি এই দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা তৈরি করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কানাডার সকল পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা অটোমোবাইল এবং জ্বালানি খাতকে সরাসরি প্রভাবিত করবে। এই পরিস্থিতিতে কার্নিকে এমন একজন নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছে যিনি ট্রাম্পের বাণিজ্য আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে সক্ষম।
কানাডার আইন অনুযায়ী, নির্বাচনের সময়কাল কমপক্ষে ৩৭ দিন এবং সর্বোচ্চ ৫১ দিন হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২৮ এপ্রিল অথবা ৫ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে কার্নিকে গভর্নর জেনারেলের সঙ্গে দেখা করতে হবে। গভর্নর জেনারেল মূলত রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতিনিধি হিসেবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি শপথ গ্রহণ করবেন এবং মন্ত্রিসভা গঠন করবেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কার্নি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ আরও জোরালোভাবে মোকাবিলা করার সম্ভাবনা রয়েছে। কার্নি তার বক্তব্যে ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে বলেন, “আমেরিকা কানাডা নয়, এবং কানাডা কোনোভাবেই আমেরিকার অংশ হবে না।” তিনি আরও বলেন, “কানাডিয়ানরা সবসময় প্রস্তুত, যখন কেউ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।”
এদিকে, রক্ষণশীল দলের নেতা পিয়েরে পয়েলিয়েভ কার্নিকে “চতুর” আখ্যা দিয়ে তার সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কার্নি বিভিন্ন সময়ে কানাডার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ট্রুডোর বিদায় এবং কার্নির আগমন লিবারেল পার্টির জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান