ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে মঙ্গলবার ম্যানিলার বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে।
ফিলিপাইনের বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দুতার্তের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যা তার মাদকবিরোধী অভিযানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, হংকং থেকে ফেরার পর পরই পুলিশ দুতার্তেকে আটক করে।
আইসিসি’র নির্দেশে এই অভিযান চালানো হয়।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস-এর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত করছে আইসিসি।
দুতার্তের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিমানবন্দরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
দুতার্তের আইনজীবী ও সহযোগীরা তার আটকের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
তারা অভিযোগ করেন, তাদের সাবেক প্রেসিডেন্টের কাছে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
দুতার্তের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সিনেটর বং গো সাংবাদিকদের বলেন, “এটা তার সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন।”
আইসিসি’র গ্রেফতারি পরোয়ানায় বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের ওপর হামলাগুলো ব্যাপক ও সুপরিকল্পিত ছিল।
এই হামলা কয়েক বছর ধরে চলেছিল এবং এতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আদালত আরও উল্লেখ করেছে, দুতার্তেকে আটক করা হয়েছে, কারণ তিনি আদালতের সমন উপেক্ষা করতে পারেন।
যদিও তিনি এখন আর প্রেসিডেন্ট নন, তবে তার যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে।
আটকের পর ভুক্তভোগীদের পরিবারে কান্নার রোল ওঠে।
নিহত কিশোর কিয়ান দেলোস সানতোসের কাকা র্যান্ডি দেলোস সানতোস বলেন, “এটা ন্যায়বিচারের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষিত একটি দিন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন অনুভব করছি, বিচার শুরু হয়েছে।
আমরা আশা করি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা ও শত শত পুলিশ সদস্যকেও আটক করে শাস্তি দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছিলেন কিয়ান দেলোস সানতোস।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৮ সালে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আইসিসি ২০০১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চের মধ্যে দুতার্তের মাদকবিরোধী অভিযানকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত শুরু করে।
দুতার্তে ২০১৯ সালে রোম সনদের সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেন।
মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন, দায়বদ্ধতা এড়ানোর জন্যই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
তবে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়র আইসিসি’র সঙ্গে সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আইসিসি যদি আন্তর্জাতিক পুলিশকে দুতার্তেকে আটকের জন্য রেড নোটিশ দেয়, তাহলে তার সরকার সহযোগিতা করবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস