গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে এবার লোহিত সাগর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জলপথে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ইসরায়েলকে সাহায্য পাঠানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা সেই শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হুতিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে এবং কোনো ইসরায়েলি জাহাজ এই নিষেধাজ্ঞা ভাঙার চেষ্টা করলে তাদের ওপর হামলা চালানো হবে।
শুধু লোহিত সাগরই নয়, আরব সাগর, বাব-আল-মান্দেব প্রণালী এবং এডেন উপসাগরেও এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
হুতিদের এই ঘোষণার ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আবারও নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে।
ইরান-সমর্থিত এই হুতি গোষ্ঠী বর্তমানে ইয়েমেনের বিশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণ করে।
গত নভেম্বরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকেই তারা এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর ওপর হামলা চালানো শুরু করে।
তাদের দাবি, ফিলিস্তিনের গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানাতেই এই পদক্ষেপ।
এর আগে, গত জানুয়ারিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর তারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ রেখেছিল।
তবে, ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে তারা পুনরায় হামলার হুমকি দেয়।
হুতিদের হামলায় এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জাহাজের ক্ষতি হয়েছে।
তাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় দুইটি জাহাজ ডুবে গেছে এবং একটি জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া, অন্তত চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন।
এর ফলে আন্তর্জাতিক নৌ-চলাচলে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।
এ কারণে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য সুয়েজ খালের বদলে আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে জাহাজগুলোকে।
হুতিদের এই পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নৌবহর পাঠিয়ে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য হুতিদের বিভিন্ন অবস্থানে বিমান হামলাও চালিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব ঘটনার মাধ্যমে হুতিদের প্রভাব বেড়েছে এবং তারা এখন ইসরায়েল ও পশ্চিমা স্বার্থের জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে হুতি আন্দোলনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা