যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশগ্রহণের জেরে আটকের ঘটনায় ম্যানহাটনের একটি ফেডারেল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
মাহমুদ খলিল নামের ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আনা অভিযোগ, তিনি ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
জানা গেছে, মাহমুদ খলিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা। শনিবার তাকে নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার করে লুইজিয়ানার একটি ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, বিচারক জেসি ফারম্যান মাহমুদ খলিলকে এখনই দেশ থেকে বের করে না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত খলিলের আইনজীবীদের করা একটি আবেদনের শুনানির প্রস্তুতি নিচ্ছে। আইনজীবীরা খলিলকে নিউইয়র্কে ফিরিয়ে এনে তত্ত্বাবধানে মুক্তি দেওয়ার আবেদন করেছেন। তাদের যুক্তি, সরকার তার মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করছে।
আগামীকালের শুনানির আগে খলিলের আইনজীবী এবং সরকারের পক্ষ থেকে যৌথভাবে জানানো হয়েছে, সরকার এই মামলার উপযুক্ত স্থান হিসেবে নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতকে মানতে রাজি নয়।
গত বছর কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ হয়। এই বিক্ষোভগুলোতে প্রায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাহমুদ খলিলের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা করেছেন, “এই ধরনের আরও অনেক গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছে।” ট্রাম্প আরও বলেন, যারা “সন্ত্রাসীদের পক্ষে, ইহুদি-বিদ্বেষী এবং আমেরিকান-বিরোধী কার্যকলাপে” জড়িত, তাদের তিনি দেশ থেকে বিতাড়িত করবেন।
মাহমুদ খলিল কলম্বিয়ার বিক্ষোভকারীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার জানান, সরকার তাকে বহিষ্কার করার পদক্ষেপ নিয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের একটি ধারা অনুযায়ী, পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থে দেশটির সেক্রেটারি অফ স্টেট একজন অভিবাসীকে বিতাড়িত করার ক্ষমতা রাখেন।
নাগরিক অধিকার সংগঠন এবং খলিলের আইনজীবীরা বলছেন, সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করে খলিলের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করছে।
ডিসেম্বরে মাহমুদ খলিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির প্রয়োজনীয়তা সম্পন্ন করেন। সিরিয়ায় জন্ম নেওয়া খলিল ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত, যাদের পূর্বপুরুষদের তাদের জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি একজন মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছেন এবং তাদের প্রথম সন্তান আসন্ন।
তথ্য সূত্র: ইন্টারনেট