নর্ওয়ের শীতকালীন ক্রীড়ায় সুট কারচুপির অভিযোগে দুই অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয়ীসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্কি ও স্নোবোর্ড ফেডারেশন (FIS)-এর তত্ত্বাবধানে এই ঘটনার তদন্ত চলছে।
জানা গেছে, খেলোয়াড়দের আরও বেশি দূরত্বে উড়তে সহায়তা করার জন্য তাদের স্কি-স্যুটগুলোতে কারচুপি করা হয়েছিল।
অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া নর্ডিক ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়া নরওয়ের খেলোয়াড়দের স্কি স্যুটগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয়ী মারিয়াস লিন্ডভিক এবং জোহান আন্দ্রে ফোরফ্যাংসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বরখাস্ত করা হয়েছে।
একইসাথে, নরওয়ের প্রধান কোচ ম্যাগনাস ব্রেভিগ এবং সরঞ্জাম ব্যবস্থাপক অ্যাড্রিয়ান লিভেলটেনও তাদের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, খেলোয়াড়দের ফ্লাইং ক্ষমতা বাড়াতে কর্মকর্তাদের সহায়তায় সূক্ষ্ম কারচুপি করা হয়েছিল।
অনুমোদিত স্কি স্যুটগুলোর আকার পরিবর্তন করে এর অ্যারোডাইনামিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়।
এর ফলে খেলোয়াড়েরা বাতাসে আরও বেশি সময় ধরে থাকতে পারতেন এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারতেন।
এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে ফেডারেশন তিনজন কর্মকর্তাকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
স্কি স্যুট পরিবর্তনের বিষয়টি প্রথম নজরে আসে, যখন গোপনে ধারণ করা কিছু ফুটেজ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
এই ফুটেজের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয় এবং সুইজারল্যান্ড-ভিত্তিক সংস্থা FIS নরওয়ের ব্যবহৃত সব স্যুট জব্দ করে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন FIS-এর রেস ডিরেক্টর সান্দ্রো পের্তিলে।
তিনি বলেন, “এই ধরনের কাজ আমাদের নীতি, আমাদের খেলার আনন্দকে হত্যা করে।”
তিনি আরও জানান, অস্ট্রিয়া, স্লোভেনিয়া ও পোল্যান্ডের প্রতিবাদের পর নরওয়েজিয়ান ফেডারেশন ঘটনার প্রমাণ পায়।
ইতিমধ্যে, অভিযুক্ত কোচ এবং সরঞ্জাম ব্যবস্থাপক তাদের দোষ স্বীকার করেছেন এবং তারা এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
তারা জানান, খেলোয়াড়দের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য তারা এই কাজ করেছিলেন।
বর্তমানে, FIS-এর তদন্তকারীরা ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
তারা খেলোয়াড়দের অতীতের পারফরম্যান্স খতিয়ে দেখছেন এবং এই কারচুপির সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তা জানার চেষ্টা করছেন।
এই ঘটনার জেরে নরওয়ের ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশটির সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস