মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রভাবশালী সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী, যিনি বন্যজীবন নিয়ে কাজ করেন, তার অস্ট্রেলিয়ার ভিসা বাতিল হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। কারণ তিনি সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন যেখানে দেখা যায়, তিনি একটি স্ত্রী-উম্বাটের কাছ থেকে তার শাবকটিকে ছিনিয়ে নিচ্ছেন। এই ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, স্যাম জোনস নামের ওই নারী রাতের বেলা একটি রাস্তার পাশে উম্বাটের বাচ্চাটিকে ধরে ফেলেন। এসময় মা উম্বাটটি তার দিকে তেড়ে আসে। ভিডিওতে জোনসকে বলতে শোনা যায়, “আমি একটি বাচ্চা উম্বাট ধরেছি।” এরপর তিনি বাচ্চাটিকে আবার রাস্তার পাশে রেখে দেন।
অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিবিদ এবং প্রাণী অধিকার কর্মীরা জোনসের এই কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী টনি বার্ক বলেছেন, জোনসের ভিসা শর্তাবলী খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তিনি যদি অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে তার ভিসা বাতিল করা হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এই ঘটনাকে “জঘন্য” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, “যদি পারেন, তবে কোনো কুমিরের বাচ্চা ধরে দেখান। এমন কোনো প্রাণীর সাথে করুন, যে পাল্টা লড়াই করতে পারে।”
আরএসপিসিএ অস্ট্রেলিয়ার একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ড. ডি ইভান্স বলেছেন, ভিডিওটিতে বন্যপ্রাণীর প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রকাশ পেয়েছে। বাচ্চার চিৎকার এবং মায়ের উদ্বেগ দেখে বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যায়। তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের দেশের সুন্দর বন্যজীবন পর্যবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত চিড়িয়াখানা এবং অভয়ারণ্যগুলোতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
জোনস অবশ্য তার কাজের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, তিনি বাচ্চাটির কোনো ক্ষতি করেননি এবং শুধুমাত্র এক মিনিটের জন্য ধরে রেখেছিলেন। তবে সমালোচনার পর তিনি তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি প্রাইভেট করে দিয়েছেন এবং একই নামের টিকটক অ্যাকাউন্টও মুছে ফেলেছেন।
অস্ট্রেলিয়ায় তিন প্রজাতির উম্বাট পাওয়া যায়, যার মধ্যে দুটি প্রজাতি বিপন্ন। জোনস যে প্রজাতির উম্বাট ধরেছিলেন, সেটি হলো সাধারণ উম্বাট বা নগ্ননাকযুক্ত উম্বাট, যা বিপন্ন নয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান