ক্যালিফোর্নিয়ার পশ্চিম উপকূল জুড়ে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। ভারী বৃষ্টিপাত, দমকা হাওয়া এবং পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাতের কারণে লস অ্যাঞ্জেলেসসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষের মতে, বিশেষ করে গত জানুয়ারির ভয়াবহ দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ভূমিধসের সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি।
লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের মেয়র কারেন বাস জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থার কারণে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমি লস অ্যাঞ্জেলেসবাসীকে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি, বিশেষ করে যারা দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বসবাস করেন। আমাদের প্রধান কাজ হলো সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় ২ কোটি মানুষের জন্য বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র এই অঞ্চলের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির সুপারভাইজার ক্যাথরিন বার্গার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ভূমিধস এবং কাদা প্রবাহের ঝুঁকি খুবই বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বসবাসকারীদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।”
লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ বুধবার ১৩৩টি বাড়িতে গিয়ে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার জরুরি পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, তারা ঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং লস অ্যাঞ্জেলেসসহ ১১টি কাউন্টিতে উদ্ধারকর্মী ও সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়েছে।
কাদা প্রবাহের ঝুঁকির উপর নজর রাখার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক লাইভ-স্ট্রিমিং ক্যামেরাও স্থাপন করা হয়েছে।
সান্তা বার্বারায় লেক ফায়ারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
সেখানকার জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ বাসিন্দাদের কাদা প্রবাহ বা ভূমিধসের ঘটনা ঘটলে বাড়ির ভেতরের কক্ষে অথবা দ্বিতীয় তলার মতো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে বলেছে।
এই ঝড়ের প্রভাব শুধু ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই।
বুধবার থেকে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায়ও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
সেখানে হালকা বন্যা দেখা দিয়েছে এবং প্রায় ২ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সান ফ্রান্সিসকো এবং স্যাক্রামেন্টো অঞ্চলে বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৯৭ কিলোমিটার পর্যন্ত, যার ফলে গাছপালা উপড়ে গেছে এবং হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
তবে, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালায় আগামীকাল সকাল পর্যন্ত ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটারের বেশি তুষারপাত হতে পারে।
এই ঝড় বৃহস্পতিবার দেশটির অন্যান্য অংশেও আঘাত হানবে, যার ফলে শিলাবৃষ্টি ও তুষারপাত হতে পারে।
মধ্য ও দক্ষিণ সমভূমি অঞ্চলে আগুন লাগার সম্ভবনা রয়েছে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চরম আবহাওয়ার সৃষ্টি হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন