যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মচারী ছাঁটাই নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ, স্বচ্ছতার অভাব ও পরিকল্পনাহীনতার অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মীর সংখ্যা কমানোর চলমান পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই পদক্ষেপের পেছনে সুস্পষ্ট কোনো কৌশল বা পরিকল্পনা নেই, বরং এটি স্বেচ্ছাচারী এবং এতে জনস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দেশটির সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতার অভাব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ‘পার্টনারশিপ ফর পাবলিক সার্ভিস’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ম্যাক্স স্টিয়ার। তিনি মনে করেন, সরকারে কর্মী ছাঁটাইয়ের বর্তমান ধারা এক প্রকার ‘জনসম্পদের ধ্বংসযজ্ঞ’। ম্যাক্স স্টিয়ারের মতে, কর্মী ছাঁটাই একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু এখানে তেমন কোনো লক্ষ্যের চিহ্ন নেই। তার ভাষায়, ‘রেডি, এম, ফায়ার’ (লক্ষ্য স্থির করো, গুলি চালাও)-এর পরিবর্তে যেন ‘ফায়ার, ফায়ার, ফায়ার’ চলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার জনগণের সম্পদ এবং এর কার্যক্রম জনগণের কল্যাণে পরিচালিত হওয়া উচিত। কিন্তু বর্তমানে যা ঘটছে, তা হলো ক্ষমতার অপব্যবহার। তারা মনে করেন, সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কর্মী ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া কিছু পদক্ষেপের সম্পর্ক রয়েছে। যেমন, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যাদের মধ্যে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীরাও রয়েছেন। এছাড়াও, সরকারি কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার কারণে সরকারের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা উচিত। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সরকার এক্ষেত্রে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারছে না। এমনকি, কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে সরকারের যে অর্থ সাশ্রয় হওয়ার কথা, বাস্তবে তার চেয়ে বেশি খরচ হতে পারে। কারণ, কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধানে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে। যেমন, যারা অন্যায়ভাবে চাকরি হারিয়েছেন, তাদের পুনর্বহাল করতে হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে।
অন্যদিকে, এই ঘটনায় প্রভাবশালী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং সরকারি সিদ্ধান্তের মধ্যে কোনো সংঘাত আছে কিনা, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যক্তির সরাসরি হস্তক্ষেপ কাম্য নয়, যদি না তা জনস্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন