ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
মস্কোতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ’কে বহনকারী একটি বিমান মস্কোতে অবতরণ করেছে বলে জানা গেছে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ কুর্স্ক অঞ্চলের কিছু এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে, যুদ্ধবিরতি আলোচনার রাশিয়ার অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা ইউক্রেন সমর্থন করতে রাজি আছে।
তবে, ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি জানান, আলোচনা শুরুর আগে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা সমীচীন হবে না।
অন্যদিকে, ক্রেমলিনের শীর্ষ উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, তিনি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থান তুলে ধরেছেন।
উশাকভ বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি যে, এটি ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর জন্য একটি অস্থায়ী বিরতি ছাড়া আর কিছুই নয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেনের উপর চাপ বজায় রাখতে চাইছে।
তারা চাইছে, ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে আসে এবং রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ডের স্বীকৃতি দেয়।
সম্প্রতি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কুর্স্ক অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
সেখানে তিনি ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিজয় অর্জনের জন্য সামরিক কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেন।
পুতিন বলেন, “নিকট ভবিষ্যতে, স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের কুর্স্ক অঞ্চলে ঘাঁটি গেড়ে থাকা শত্রুদের সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করতে হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের কুর্স্ক সফর ছিল রাশিয়ার আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রদর্শনের একটি অংশ।
এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, কুর্স্ক অঞ্চলের উপর ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ আলোচনার টেবিলে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
বর্তমানে, ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে তারা সন্দিহান।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের শুরুতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং কয়েক মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা