**সিরিয়ার দামেস্কে ইসরায়েলি বিমান হামলা, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের কেন্দ্র লক্ষ্য**
বৃহস্পতিবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলের দাবি, ভবনটি ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) নামক একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর কেন্দ্র ছিল এবং সেখান থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা করা হতো।
সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিরিয়ার অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনি জঙ্গিগোষ্ঠীর উপস্থিতি সহ্য করা হবে না এবং এর সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। ব্রিটেনের মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, দামেস্কের উত্তর-পশ্চিমের দুমার এলাকায় ওই ভবনটিতে হামলা চালানো হয়েছে এবং এতে একজন নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, “যখনই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত হবে, সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা’র মাথার উপর ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর প্লেন উড়তে দেখা যাবে এবং সন্ত্রাসীদের আস্তানায় আঘাত হানা হবে।”
অন্যদিকে, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দেশটির বিরুদ্ধে যৌন ও প্রজননগত সহিংসতা সহ অন্যান্য লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার “পরিকল্পিত ব্যবহারের” অভিযোগ এনেছেন। জেনেভায় জাতিসংঘের ইসরায়েলি মিশন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এবং প্যালেস্টাইনের অধিকৃত অঞ্চলের তদন্ত কমিশনের (Commission of Inquiry on the Occupied Palestinian Territory) প্রতিবেদনের সমালোচনা করে বলেছে, কমিশন “দ্বিতীয় পক্ষের, যাচাইহীন, অনির্ভরযোগ্য সূত্রের” উপর নির্ভর করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ইসরায়েল এই কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করেছে এবং কমিশন ও মানবাধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে।
ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের একজন সদস্য জানিয়েছেন, যে অ্যাপার্টমেন্টটিতে হামলা চালানো হয়েছে, সেটি তাদের নেতা জিয়াদ নাখালেহর বাসভবন ছিল। তবে তিনি বর্তমানে সিরিয়ায় নেই। তিনি আরও জানান, কয়েক বছর ধরে বাড়িটি খালি ছিল।
এদিকে, ইসরায়েল সিরিয়ার সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের জন্য ১০,০০০ প্যাকেট খাদ্য সহায়তা পাঠিয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থানীয় দ্রুজ নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সম্প্রতি এই সহায়তা পাঠানো হয়েছে এবং এর অধিকাংশই সুইদা অঞ্চলের দ্রুজ অধ্যুষিত এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে।
ইসরায়েল মনে করে, তারা একটি কোণঠাসা সংখ্যালঘুদের সহায়তা করছে, যারা বর্তমানে ইসলামপন্থীদের দ্বারা শাসিত হচ্ছে। তবে অনেক দ্রুজ ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন যে, বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতির পর ইসরায়েল সিরিয়াকে দুর্বল ও বিভক্ত করার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এখনো চলছে। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হওয়ার পর এই অভিযান শুরু হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় জানিয়েছে, হামাসের হামলায় ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ‘যুক্তিযুক্ত প্রমাণ’ রয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস