পানামা খাল: ট্রাম্পের ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ ফিরে পাওয়ার অভিপ্রায়, সামরিক বিকল্প খুঁজছে পেন্টাগন
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পানামা খালের উপর ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ ফিরে পেতে সামরিক পদক্ষেপ সহ বিভিন্ন বিকল্প পর্যালোচনা করার জন্য পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি একাধিক সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। পানামা খাল হলো উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। এই খালটি বিশ্বের অন্যতম কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথ হিসেবেও বিবেচিত হয়।
খবরে প্রকাশ, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই এই খালটি “ফিরিয়ে” আনার কথা বলছেন। তিনি কোনো প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করেছেন যে, চীন এই খালের নিয়ন্ত্রণ করছে এবং এর মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে। যদিও তিনি কিভাবে খালটি পুনরুদ্ধার করতে চান, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। এমনকি সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা, সে সম্পর্কেও কিছু বলেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন প্রশাসনের একটি অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশনায় সামরিক বাহিনীকে পানামা খালের “নিখুঁত” প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিকল্পগুলি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। অপর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কাছে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের বিকল্প রয়েছে, যার মধ্যে পানামার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করাও অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে, পানামা খালের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ইয়া ইস্পিনো দে মারোটা গত জানুয়ারিতে এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন, “খালটি সম্পূর্ণরূপে পানামীয়দের দ্বারা পরিচালিত হয়। আমরা একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। এখানে চীনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
উল্লেখ্য, পানামা খাল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথ। ১৯০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র পানামার কাছ থেকে খালের নিয়ন্ত্রণ লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের আমলে একটি চুক্তির মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে পানামার কাছে এর নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করা হয়। কোনো বিদেশি শক্তি যদি জোর করে খালটি দখল করতে চায়, তবে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও পানামা উভয় দেশই খালের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য চুক্তিবদ্ধ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী একতরফা ব্যবস্থা নিতে পারে।
পানামা খালের এই ঘটনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে এবং সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। তাই পানামা খালের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান