যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের কারণে তাঁর ছেলের চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন এক রিপাবলিকান ভোটার। তাঁর ছেলে একজন রূপান্তরকামী (ট্রান্সজেন্ডার) পুরুষ। সম্প্রতি সিএনএন-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
অ্যাশটন কোলবি নামের ওই ব্যক্তির বাবা রিক কোলবি ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন। রিক মনে করেন, তাঁর ছেলের লিঙ্গ-সংক্রান্ত পরিচয়ের স্বীকৃতি এবং চিকিৎসার অধিকার রক্ষার জন্য তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। অ্যাশটনের অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর বাবা সবসময় পাশে ছিলেন। অস্ত্রোপচারের পর যখন অ্যাশটনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল, তখন বাবা হিসেবে রিকই ছিলেন তাঁর প্রধান সহযোগী।
ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা তাঁদের লিঙ্গপরিচয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে জীবন যাপন করতে কিছু চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করেন, যা ‘জেন্ডার-এফার্মিং কেয়ার’ নামে পরিচিত। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নির্বাহী আদেশে এই ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোতে ফেডারেল তহবিল বন্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে অ্যাশটনের মতো প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি, নাবালকদের চিকিৎসা পরিষেবাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও আদালতের হস্তক্ষেপে এই আদেশের বাস্তবায়ন বর্তমানে স্থগিত রয়েছে, তবুও অনেক চিকিৎসা কেন্দ্র তাদের পরিষেবা সীমিত করে ফেলেছে।
অ্যাশটনের ভাষ্যমতে, ২০১৬ সাল থেকে তিনি একটি বিশেষ ক্লিনিকে ‘জেন্ডার-এফার্মিং কেয়ার’ পরিষেবা গ্রহণ করছেন। কিন্তু ট্রাম্পের আদেশের কারণে তাঁর চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অ্যাশটনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ফেডারেল তহবিলের অভাবে তাঁদের অন্য রাজ্যে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, দেশটির অনেক রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীরা চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। বিশেষ করে, যেসব শিশু হরমোন থেরাপি (puberty blockers) গ্রহণ করছে, তাদের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেলে গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার বিষয়ক বিভিন্ন বিল পাশের ক্ষেত্রে রিপাবলিকানদের বিরোধিতার বিষয়টিও এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। রিক কোলবি মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের প্রতি অবিচারস্বরূপ। রিক বলেন, “ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং তাঁদেরও স্বাভাবিক জীবন যাপনের অধিকার রয়েছে। তাই তাঁদের অধিকারের প্রতি সম্মান জানানো উচিত।”
অ্যাশটন জানিয়েছেন, বাবার এই সমর্থন তাঁকে মানসিক শক্তি জোগায়। যদিও তাঁরা রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন মতাদর্শের অনুসারী, তবুও এই কঠিন সময়ে তাঁদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। অ্যাশটন বলেন, “আমি সবসময় অনুভব করি, বাবা আমাকে ভালোবাসেন এবং আমার পাশে আছেন।”
তথ্যসূত্র: সিএনএন