গাজায় জিম্মি পরিবারের সদস্যরা চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের স্বজনদের মুক্তির জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় তারা এখন গভীর হতাশায় নিমজ্জিত। নিজেদের প্রিয়জনদের ফিরে পাওয়ার আকুল বাসনায় তারা তাকিয়ে আছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের দিকে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরও ভরসা রাখতে চাইছে অনেক পরিবার।
অক্টোবর মাসে হামাস কর্তৃক অপহরণের শিকার হওয়া তরুণ নিরোদ কোহেনের মা ভিকি কোহেন এখনো জানেন না, কেন তার ছেলে একটি কাকের ছবি নিজের শরীরে ট্যাটু হিসেবে এঁকেছিল। বন্দী হওয়ার পর দীর্ঘদিন তিনি ছেলের কোনো খবর পাননি। সম্প্রতি হামাসের একটি ভিডিওতে ছেলেকে দেখার পর তিনি কিছুটা স্বস্তি পেলেও, ছেলের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মুক্তি আলোচনায় তরুণ সৈন্যদের অগ্রাধিকার না দেওয়াটা তাদের হতাশ করেছে।
বর্তমানে গাজায় জীবিত অবস্থায় থাকা ২৪ জন জিম্মির মধ্যে নিরোদ কোহেন অন্যতম। হামাস এখনো পর্যন্ত কয়েকজন মার্কিন নাগরিকসহ মোট ৫৯ জন জিম্মিকে আটকে রেখেছে। জানা গেছে, হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি আছে, তবে ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের শর্ত নিয়ে এখনো সমঝোতা হয়নি।
ইতিমধ্যে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য একটি নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে জিম্মিদের পরিবারগুলো মনে করছে, এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের প্রিয়জনদের মুক্তি বিলম্বিত করতে পারে। তারা দ্রুততম সময়ে জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি “ব্যাপক ও তাৎক্ষণিক চুক্তির” দাবি জানাচ্ছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তার কট্টরপন্থী মিত্রদের চাপের মুখে রয়েছে। কিছু মন্ত্রী হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার পক্ষে এবং গাজা উপত্যকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন।
ভিকি কোহেন মনে করেন, ইসরায়েল সরকার জিম্মিদের মুক্তির চেয়ে হামাসকে ধ্বংস করাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, “যুদ্ধ বন্ধ করে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও, আগে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা উচিত।
এমন পরিস্থিতিতে জিম্মিদের পরিবারগুলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর আস্থা রাখছে। তারা বিশ্বাস করে, ট্রাম্পের সরাসরি হস্তক্ষেপে জিম্মিদের মুক্তি দ্রুত সম্ভব হতে পারে। ট্রাম্প ইতোমধ্যে হামাসকে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
তবে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের ফিরে পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন