যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্ভবত আরও একটি নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করছে, যা ডজনখানেক দেশের নাগরিকদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারে। একটি নতুন খসড়া তালিকায় ৪৩টি দেশের নাম রয়েছে, যেখানে ভিসা নিষেধাজ্ঞার মাত্রা অনুযায়ী দেশগুলোকে তিনটি ভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে।
জানা গেছে, এই খসড়া তালিকায় প্রথম গ্রুপে রয়েছে ১০টি দেশ। এদের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, ইরান, সিরিয়া, কিউবা এবং উত্তর কোরিয়া। এই দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য সকল প্রকার ভিসার ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। দ্বিতীয় গ্রুপে থাকা ৫টি দেশ হলো – ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার এবং দক্ষিণ সুদান। এই দেশগুলোর ক্ষেত্রে পর্যটন ও ছাত্র ভিসাসহ অভিবাসন ভিসার কিছু প্রকারের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় থাকতে পারে। তৃতীয় গ্রুপে রয়েছে ২৬টি দেশ। এর মধ্যে আছে বেলারুশ, পাকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান। যদি এই দেশগুলোর সরকারগুলো ৬০ দিনের মধ্যে তাদের ভিসা প্রক্রিয়াকরণের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে ব্যবস্থা না নেয়, তবে তাদের ওপরও আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনা করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই তালিকা এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি এবং এতে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনাও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ প্রশাসনের অনুমোদন পেলেই এটি কার্যকর হবে।
ট্রাম্পের এই নতুন পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হলো জাতীয় নিরাপত্তা। এর আগে, গত ২০শে জানুয়ারি ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য আবেদনকারীদের নিরাপত্তা যাচাই আরও জোরদার করার কথা বলা হয়। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, দেশের নিরাপত্তা হুমকিস্বরূপ এমন বিদেশি নাগরিকদের চিহ্নিত করা। গত বছরের অক্টোবর মাসে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্প গাজা উপত্যকা, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে এমন যেকোনো স্থান থেকে আসা লোকজনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবনা ট্রাম্পের আগের বিতর্কিত নীতিরই পুনরাবৃত্তি। ২০১৬ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে সাতটি মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। সেই সময় এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয় এবং এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে মামলাও হয়। যদিও পরে সুপ্রিম কোর্ট এই নিষেধাজ্ঞার একটি পরিবর্তিত সংস্করণ বহাল রেখেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞায় ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা