ট্রাম্পের নির্দেশে ইয়েমেনে বিমান হামলা, লোহিত সাগরে নৌ চলাচলে অস্থিরতা
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হুতি বিদ্রোহীদের হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘মার্কিন নৌ ও বাণিজ্যিক জাহাজ রক্ষার জন্য’ তিনি এই হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘প্রবল শক্তি’ প্রয়োগ করা হবে।
লোহিত সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ, যা এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য যোগাযোগের অন্যতম প্রধান রুট। হুতি বিদ্রোহীরা গত কয়েক মাস ধরে এই রুটে বাণিজ্যিক জাহাজ ও সামরিক নৌযানের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলের অবরোধের প্রতিবাদে তারা এই হামলা চালাচ্ছে। হুতিদের হামলায় এ পর্যন্ত চারটি জাহাজের নাবিক নিহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ট্রাম্প এক বিবৃতিতে ইরানের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন বন্ধ করতে হবে, অন্যথায় ইরানকে এর ‘পূর্ণ দায়’ নিতে হবে। উল্লেখ্য, হুতি বিদ্রোহীরা শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি অংশ, যাদের ইরান সমর্থন করে।
এই হামলার পর ইয়েমেনে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, ইয়েমেন দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। হুতিদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাসিন্দারা এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার শিকার হয়েছে। সানার আকাশে শনিবার সন্ধ্যায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং বিমানবন্দরের কাছে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। হুতিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় সানার একটি আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিমান হামলা শুধু তাদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এই হামলায় ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরী এবং ইউএসএস জর্জিয়া ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন অংশ নেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হামলার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি, পণ্য সরবরাহ বিলম্বিত হওয়া এবং আমদানি-রফতানি খরচ বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এলো, যখন বিশ্বে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে, পরিস্থিতি শান্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা জরুরি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান