কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে সফর করছেন, যেখানে তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে আগ্রহী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার ঘোষণার প্রেক্ষাপটে কার্নি এই পদক্ষেপ নিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই আগ্রাসী মনোভাবের কারণে কানাডা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন মিত্র খুঁজছে। বিশেষ করে, কানাডার অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে এবং বাণিজ্য সম্পর্ককে বহুমুখী করতে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সফরের প্রথম পর্যায়ে কার্নি প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি লন্ডনে যান, যেখানে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার বৈঠক হয়। এই বৈঠকগুলোতে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং শুল্কের বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া, তিনি ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, কার্নি একসময় ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর ছিলেন এবং এই পদে অধিষ্ঠিত প্রথম অ-ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন।
কানাডার আর্কটিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়েও কার্নি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি শীঘ্রই কানাডার আর্কটিক অঞ্চলে যাবেন এবং সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য শুল্ক আরোপের কারণে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। কানাডার অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল, দেশটির প্রায় ৭৫ শতাংশ রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত করা এবং নতুন বাজার তৈরি করা জরুরি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, কার্নি এই মুহূর্তে ওয়াশিংটন সফর করা থেকে বিরত থাকছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা কম। বরং এর মাধ্যমে কানাডার সম্মানহানি হতে পারে।
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্ক কার্নির এই বৈদেশিক সফর এবং গৃহীত পদক্ষেপগুলো দেশটির অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস