ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি এমনটাই জানা গেছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয় যে, নেতানিয়াহু এই বিষয়ে শিন বেট-এর প্রধান রোনেন বার-কে অবহিত করেছেন এবং চলতি সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় তাকে অপসারণের প্রস্তাব দেবেন।
জানা যায়, নেতানিয়াহু শিন বেট প্রধানের ওপর আস্থা হারিয়েছেন। এর মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে গত ৭ অক্টোবরের হামাস হামলা এবং এরপর নিরাপত্তা সংস্থাটির ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ।
নেতানিয়াহু মনে করেন, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন এবং ভবিষ্যতে বিপর্যয় রোধ করার জন্য এই পরিবর্তন আনা জরুরি।
শিন বেট হলো ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা। দেশের ভেতরের নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় এর প্রধান ভূমিকা।
আর্থাৎ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) মতো। হামাসের হামলার পর শিন বেট-এর অভ্যন্তরীণ তদন্তে নিরাপত্তা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করা হয়েছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা তাদের দায়িত্ব পালনে “ব্যর্থ” হয়েছে। একই সঙ্গে, হামাসকে কাতারের অর্থ প্রদানের বিষয়ে নেতানিয়াহুর অফিসের বিরুদ্ধে আনা কিছু অভিযোগের দিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
তবে, বিরোধী দলনেতারা নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ বলেছেন, “দেড় বছর ধরে তার (বার) বরখাস্ত করার কোনো কারণ ছিল না, কিন্তু যখন কাতারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর অফিসের যোগসাজশ এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের কাছে অর্থ স্থানান্তরের তদন্ত শুরু হলো, তখনই তিনি তাকে দ্রুত বরখাস্ত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন।
জাতীয় ঐক্য পার্টির চেয়ারম্যান বেনি গান্টজ একে “রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং ইসরায়েলি সমাজে বিভেদ তৈরির সরাসরি লঙ্ঘন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তবে, সরকারের কট্টর-ডানপন্থী কয়েকজন সদস্য নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ একে “প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
অন্যদিকে, শিন বেট প্রধান রোনেন বার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি তার পদ ছাড়ার আগে কিছু দায়িত্ব পালন করতে চান।
তিনি বলেন, “শিন বেট প্রধান হিসেবে আমার প্রধান কর্তব্য হলো ইসরায়েলের নাগরিকদের প্রতি আস্থা রাখা। আমার সব কাজ ও সিদ্ধান্তের ভিত্তি হলো এই ধারণা। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আস্থার প্রত্যাশা, যা জনস্বার্থের পরিপন্থী, তা সম্পূর্ণ ভুল।”
নেতানিয়াহু সম্প্রতি হামাসের সঙ্গে আলোচনায় জড়িত দল থেকে বার এবং মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়াকে সরিয়ে দিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন