উত্তর মেসিডোনিয়ার একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন ৫৯ জন, আহত হয়েছেন আরও ১৫৫ জন। কোকানি শহরের ‘পালস’ নামের নাইটক্লাবে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে, যা শোকের ছায়া ফেলেছে পুরো অঞ্চলে।
রবিবার গভীর রাতে হিপ-হপ শিল্পী ডিএনকে’র কনসার্টের সময় ফায়ার থেকে বের হওয়া স্ফুলিঙ্গ ক্লাবটির ছাদে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়লে সেখানে উপস্থিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মৃতের মরদেহ সনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, ক্লাবটিতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত লোক ছিল এবং অগ্নিনির্বাপণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না। কর্তৃপক্ষের গাফিলতি এবং ঘুষ লেনদেনের অভিযোগও উঠেছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যে প্রায় ২০ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যাদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাও রয়েছেন।
গ্রিস, বুলগেরিয়া, সার্বিয়া এবং তুরস্কের মতো দেশগুলো গুরুতর আহত রোগীদের চিকিৎসার জন্য গ্রহণ করেছে। তাছাড়া, বেশ কয়েকটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পাঠানো হচ্ছে।
এই ঘটনার জেরে উত্তর মেসিডোনিয়ার বিভিন্ন স্থানে শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। রাজধানী স্কোপজে’র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন ও নীরবতা পালন করা হয়।
অনেকে এই ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং এর জন্য সরকারের দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন। তাদের মতে, কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং নিরাপত্তা বিধিনিষেধ না মানার কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সরকার এই ঘটনার পর দেশটির সকল নাইটক্লাব ও ক্যাবারেতে তিন দিনের জন্য জরুরি পরিদর্শন ঘোষণা করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ক্লাবটিতে জরুরি নির্গমন পথ, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং অগ্নিনির্বাপণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘জনসাধারণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা’ সহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় বিভিন্ন দেশে প্রার্থনা ও শোক প্রকাশ করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা