দক্ষিণ মেরুর একটি গবেষণা কেন্দ্রে এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার শিকার ব্যক্তি তাঁর এবং অন্যান্য সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগকারী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁদের জীবন এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সানে চতুর্থ গবেষণা কেন্দ্রে ঘটা এই ঘটনাটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ঘটনার শিকার ব্যক্তি ইমেলের মাধ্যমে তাঁর উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন। ওই ইমেলের মাধ্যমে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর এক সহকর্মীকে মারধর করেন এবং তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেন। এই ধরনের আচরণ কর্মক্ষেত্রের স্বাভাবিক পরিবেশের পরিপন্থী এবং অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী ডিয়ন জর্জেস এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। যদিও তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি, তবে জানা গেছে, কর্মীদের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট কাজ নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। আবহাওয়ার কারণে কাজটি সময় মতো সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছিল না।
বর্তমানে, ওই গবেষণা কেন্দ্রে দশ জন কর্মী রয়েছেন। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তাঁদের সেখানে থাকতে হবে। কারণ, বরফ এবং তীব্র শীতকালীন ঝড়ের কারণে ওই সময়ে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। এই কেন্দ্রটি অ্যান্টার্কটিকার বরফের প্রান্ত থেকে প্রায় একশ মাইল দূরে অবস্থিত।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তি ইমেলের মাধ্যমে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির আচরণ ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছিল। তিনি তাঁর সহকর্মীর উপর শারীরিক আক্রমণ করেন এবং হত্যার হুমকি দেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত।
এই ঘটনার দ্রুত প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। জানা গেছে, কর্মীদের দলটিতে ডিসেম্বর মাসেই আনা হয়েছিল এবং ঘটনার এক মাস পরেই এই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই গবেষণা কেন্দ্রটি জার্মান ও নরওয়ের গবেষণা কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থিত। জার্মানির নিউমায়ার স্টেশন থ্রি এবং নরওয়ের ট্রল বেস-এর থেকে এটির দূরত্ব যথাক্রমে ১৩৭ মাইল ও ১১৮ মাইল।
দক্ষিণ আফ্রিকার বন, মৎস্য ও পরিবেশ বিষয়ক দপ্তর জানিয়েছে, কর্মীদের সুস্থতা এবং সুরক্ষার জন্য তাঁরা গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। ঘটনার তদন্তের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৬০ সালে অ্যান্টার্কটিকায় প্রথম গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করে। এই কেন্দ্রে ভূ-চৌম্বক ক্ষেত্র, অ্যান্টার্কটিকার ভূতত্ত্ব এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করা হয়।
এর আগে, ২০১৭ সালেও দক্ষিণ আফ্রিকার মেরিয়ন দ্বীপের একটি গবেষণা কেন্দ্রে কর্মীদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।