ডাবলিনের একটি বিখ্যাত ভাস্কর্য, ‘মলি ম্যালোন’-এর প্রতি পর্যটকদের অশোভন আচরণ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন এক তরুণী। মলি ম্যালোন নামের এই ভাস্কর্যটি একজন কল্পিত মাছ বিক্রেতাকে উৎসর্গীকৃত, যা ডাবলিনের অন্যতম জনপ্রিয় একটি আকর্ষণ।
ব্রিটিশ তরুণী টিলি ক্রিপওয়েল ডাবলিনের বিখ্যাত ট্রিনিটি কলেজে ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করছেন। তিনি শহরের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করেন। মলি ম্যালোন-এর ব্রোঞ্জ মূর্তিটির কাছে প্রায়ই তিনি পর্যটকদের ছবি তুলতে দেখেন। “মলি ম্যালোন” নামের একটি লোকসংগীতের মাধ্যমে এই নারী চরিত্রটি ডাবলিনের সংস্কৃতিতে জড়িয়ে আছেন।
কিন্তু ক্রিপওয়েল লক্ষ্য করেছেন, অনেকেই ছবি তোলার সময় মলি ম্যালোন-এর পোশাকের দিকে আকৃষ্ট হন এবং তার স্তন স্পর্শ করেন। এমনকি অনেকে এর সাথে সৌভাগ্য জড়িত বলেও মনে করেন। এই ধরনের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি এর প্রতিকারের জন্য একটি প্রচারণা শুরু করেছেন।
ক্রিপওয়েল জানান, তিনি প্রায়ই এই ধরনের অশোভন দৃশ্য দেখতে পান। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আসলে এটা কোনো ঐতিহ্য নয়, বরং গত ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে শুরু হওয়া একটি প্রবণতা। সাধারণত, ছবি তোলার সময় মূর্তির পেছন থেকে নারীরা তার স্তন স্পর্শ করেন। অনেকে চুমু খান বা তাদের মুখ সেখানে ঘষেন। তারা খুব হৈচৈও করেন।”
ক্রিপওয়েল মনে করেন, এই ধরনের আচরণ সমাজে নারীদের প্রতি খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তিনি চান, মূর্তির পাদদেশটি উঁচু করা হোক, যাতে এটি সহজে স্পর্শ করা না যায়। এছাড়াও, তিনি চান পুরো মূর্তিটিকে পুনরায় রং করা হোক, যাতে এর স্তনের অংশে হওয়া বিবর্ণতা দূর হয়। একইসঙ্গে, মলি ম্যালোন-এর গল্পের একটি ফলক সেখানে স্থাপন করারও প্রস্তাব করেছেন তিনি।
ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ক্রিপওয়েল #LeaveMollymAlone (“মলিকে একা থাকতে দিন”) নামে একটি সামাজিক মাধ্যম প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি ডাবলিন সিটি কাউন্সিলের সঙ্গেও দেখা করেছেন এবং পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এই পরিবর্তনগুলো মলি ম্যালোন-এর সম্মান বৃদ্ধি করবে।
ক্রিপওয়েল জানিয়েছেন, ডাবলিন সিটি কাউন্সিল সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছে। তারা ট্যুর গাইড কোম্পানিগুলোকে মূর্তি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে বলতে অনুরোধ করেছে। ক্রিপওয়েল তার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে মলি ম্যালোন গানের একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করেছেন, যেখানে এই ধরনের আচরণের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন