মাদ্রিদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সপ্তাহে দুই ঘণ্টার বেশি কম্পিউটার ব্যবহারের অনুমতি নেই, নতুন নির্দেশিকা জারি।
স্পেনের মাদ্রিদ অঞ্চলের সরকার সেখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কম্পিউটার ও ট্যাবলেটের ব্যবহার সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এখন থেকে শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবে। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের জন্যেও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে কোনো বাড়ির কাজ দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো অল্প বয়সে শিশুদের উপর প্রযুক্তি ব্যবহারের অতিরিক্ত চাপ কমানো।
আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই নিয়ম কার্যকর করা হবে এবং মাদ্রিদের প্রায় ২০০০ সরকারি স্কুলের প্রায় ৫ লক্ষ শিক্ষার্থীর উপর এর প্রভাব পড়বে। মাদ্রিদ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা শিক্ষার মৌলিক কাঠামোতে ফিরে যেতে চায়।
বই, হাতের লেখা এবং ক্লাসরুমের প্রচলিত পদ্ধতির সাথে ডিজিটাল দক্ষতার সমন্বয় ঘটাতে চাইছে তারা।
নতুন নিয়মানুযায়ী, একেবারে ছোট শিশু অর্থাৎ যাদের বয়স তিন বছরের কম, তাদের জন্য কোনো স্ক্রিন ব্যবহারের অনুমতি থাকবে না। অন্যদিকে, তিন থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুরা সপ্তাহে এক ঘণ্টা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৯০ মিনিট এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা দু’ঘণ্টা কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পাবে। তবে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এই ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম শিথিল করা হবে।
স্পেনে শিশুদের মধ্যে স্ক্রিন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, যা নিয়ে অভিভাবক এবং শিক্ষাবিদদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারও শিশুদের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের বয়সসীমা ১৪ থেকে বাড়িয়ে ১৬ করার কথা ভাবছে।
তারা সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলোকে ব্যবহারকারীর বয়স যাচাই করার ব্যবস্থা চালু করতে এবং স্মার্টফোনে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ডিফল্ট হিসেবে সেট করারও প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়াও, শিশুদের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতে দেশব্যাপী প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
যদিও স্পেনের কিছু অঞ্চলে ইতোমধ্যে স্কুলে মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও শিক্ষক-নির্ভর, শিক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।