বোয়িং কোম্পানির সাবেক এক কর্মকর্তার আত্মহত্যার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিমানের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তার পরিবার এবার বিমান প্রস্তুতকার এই কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করেছে।
জন বার্নেট নামের ওই ব্যক্তি এক সময় বোয়িং-এর গুণগত মান নিরীক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি এই চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি মাঝেমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের কাছে বোয়িং বিমানের কারিগরি ত্রুটি নিয়ে মুখ খুলতেন।
তার অভিযোগ ছিল, বোয়িং কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে যাত্রীবাহী বিমানের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
বার্নেটের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। আইনজীবীরা তাকে কয়েক দিন ধরে জেরা করার পরেই গত ৯ মার্চ তিনি দক্ষিণ ক্যারোলিনার একটি হোটেলে আত্মহত্যা করেন।
বার্নেটের পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, বোয়িং কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে বার্নেটকে হয়রানি করেছে। তাকে মিথ্যা কাজের মূল্যায়ন দেওয়া হয়েছে এবং খারাপ শিফটে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
এমনকি, তার সহকর্মীদের কাছে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করারও চেষ্টা করা হয়েছে। বার্নেটের পরিবারের অভিযোগ, বোয়িং কর্তৃপক্ষের এই ধরনের আচরণের কারণেই তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন এবং এক পর্যায়ে আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নিতে বাধ্য হন।
মামলায় বার্নেটের পরিবার মানসিক আঘাত ও কষ্টের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। এছাড়াও, তারা বকেয়া বেতন, ভবিষ্যতের সম্ভাব্য আয়, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খরচ এবং জীবন বীমার সুবিধা চেয়ে আবেদন করেছেন।
মামলার শুনানিতে বার্নেটের পরিবার জানায়, বার্নেট বোয়িং-এর ৭৩৭ এবং ৭৮৭ মডেলের বিমানের ত্রুটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি বিমানের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশে পাওয়া ত্রুটি এবং অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন।
বোয়িং কর্তৃপক্ষ এখনো পর্যন্ত আদালতের এই মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জন বার্নেটের মৃত্যুতে তারা শোকাহত এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন