গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (ডিআরসি) চলমান সংঘাতের মধ্যে, এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাদের অধিকৃত ওয়ালেকালি শহর থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। এই পদক্ষেপ শান্তি আলোচনার প্রতি সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শনিবার বিদ্রোহী জোট ‘কঙ্গো রিভার অ্যালায়েন্স’ এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ওয়ালেকালি এবং তার আশেপাশের এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে পূর্বাঞ্চলীয় ডিআরসিতে এম২৩ বিদ্রোহীদের অগ্রাভিযান বেশ বেড়ে গিয়েছিল। তারা এক সপ্তাহের মধ্যেই ওয়ালেকালি শহরটি দখল করে নেয়।
বিদ্রোহীদের এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত দেশটির সরকার এবং আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কঙ্গোর সরকার আশা করছে, বিদ্রোহীদের এই পদক্ষেপ বাস্তব রূপ নেবে।
এর আগে, এম২৩ গোষ্ঠী ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে অ্যাঙ্গোলায় কঙ্গো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নির্ধারিত আলোচনা বাতিল করে দেয়।
উল্লেখ্য, ওয়ালেকালি শহরটি বিদ্রোহীদের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিদ্রোহীদের সবচেয়ে পশ্চিমের ঘাঁটি এবং কিসাঙ্গানি শহরের কাছাকাছি অবস্থিত।
কিসাঙ্গানি ডিআরসির চতুর্থ বৃহত্তম শহর এবং রাজধানী কিনশাসা থেকে প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার দূরে কঙ্গো নদীর তীরে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর।
বিদ্রোহীরা যদি ওয়ালেকালির নিয়ন্ত্রণ ছাড়ে, তবে তাদের কিসাঙ্গানির দিকে অগ্রসর হওয়ার পথ দুর্বল হয়ে যাবে।
বিদ্রোহীদের এই ঘোষণার পর কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসে কায়িকওয়াম্বা ওয়াগনার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা দেখব এম২৩ সত্যিই ওয়ালেকালি থেকে সেনা সরায় কিনা এবং তারা সংলাপ ও শান্তিকে গুরুত্ব দেয় কিনা।
আমরা আশা করি, এটি একটি বাস্তব পদক্ষেপ হবে।”
ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও কঙ্গোর সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা এই ঘোষণার বিষয়ে কিছুটা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্রোহী জোটের এক শীর্ষ সদস্য রয়টার্সকে জানান, সেনা সরিয়ে নেওয়ার অর্থ হল “শান্তিকে সুযোগ দেওয়া”।
তবে, বিদ্রোহীরা তাদের সেনা কোথায় সরিয়ে নেবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি আরও বলেন, “আমরা ওয়ালেকালি এবং এর আশেপাশের এলাকাকে ‘ডিমিলিটারাইজড’ রাখতে চাই।
যদি কঙ্গোর সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা ফিরে আসে, তাহলে এর অর্থ হবে তারা আবার সংঘাত শুরু করতে চায়।”
বর্তমানে, ডিআরসিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। এম২৩ বিদ্রোহীদের এই সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা সেই শান্তি প্রক্রিয়ার একটি অংশ হতে পারে।
তবে, পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত এবং কঙ্গোতে শান্তি ফিরিয়ে আনা সহজ হবে কিনা, তা সময়ই বলবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা