যুক্তরাজ্যে সরকারি ব্যয়ে বড় ধরনের কাটছাঁটের প্রস্তুতি চলছে, যার ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে প্রায় ২.২ বিলিয়ন পাউন্ড (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৩০০ বিলিয়ন টাকার বেশি) সাশ্রয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিভিন্ন সরকারি বিভাগে প্রশাসনিক খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সরকারের ব্যয় পর্যালোচনার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৮-২৯ সালের মধ্যে প্রশাসনিক বাজেট ১০ শতাংশ কমিয়ে ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় করা হবে।
সরকারি কর্মকর্তাদের সংগঠনগুলো এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করছে এবং এর ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চাকরি হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
তাদের মতে, প্রশাসনিক ব্যয় হ্রাস করা হলে তা সরকারি পরিষেবার মানকে প্রভাবিত করবে।
কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘এফডিএ’-এর প্রধান ডেভ পেনম্যান জানিয়েছেন, ‘সরকার সরাসরি কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিবর্তে অন্যভাবে ব্যয় সংকোচনের কথা বলছে, তবে ব্যাক অফিস ও ফ্রন্টলাইনের মধ্যেকার বিভাজনটি কৃত্রিম।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই ধরনের ব্যয় সংকোচনের ফলে অনেক বিভাগের কর্মীর ওপর প্রভাব পড়বে এবং সরকারি কর্মীদের বেতন খাতে প্রায় ১০ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় হবে।’
অন্যদিকে, ‘প্রস্পেক্ট’ নামক অন্য একটি সংগঠনের প্রধান মাইক ক্ল্যান্সি সতর্ক করে বলেছেন, ‘কম খরচের সরকারি ব্যবস্থা ভালো পরিষেবার সমার্থক নয়।’
তিনি মনে করেন, সরকার যদি নির্বিচারে কর্মী ছাঁটাইয়ের লক্ষ্য নেয়, তবে এর ফলস্বরূপ প্রকৃত সরকারি সংস্কারের পরিবর্তে কেবল অর্থ সাশ্রয় হবে।
ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা প্রশাসনিক ব্যয় কমিয়ে শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশের মতো ফ্রন্টলাইন কর্মীদের জন্য আরও বেশি সম্পদ যোগান দিতে চায়।
আগামী সপ্তাহে ল্যাঙ্কাশায়ারের ডিউকের চ্যান্সেলর প্যাট্রিক ম্যাকফ্যাডেন বিভাগীয় প্রধানদের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভসও আগামী সপ্তাহে তার বাজেট বক্তৃতায় ব্যয় সংকোচনের ঘোষণা দিতে পারেন।
অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ঋণ নেওয়ার কারণে তিনি এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা খাতে অর্থ বরাদ্দের জন্য বৈদেশিক সাহায্য কমানো হয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান