যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানে এক যাত্রীকে জোর করে বাথরুম থেকে বের করে আনার অভিযোগে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিমানের বাথরুমে আটকে পড়া এক ব্যক্তির সঙ্গে হওয়া দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন তিনি।
নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা এই মামলায় ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন ভুক্তভোগী যাত্রী।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত ২৮শে জানুয়ারি মেক্সিকোর তুলুম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনগামী একটি ফ্লাইটে এই ঘটনা ঘটে। ইসরায়েল লিব নামের ওই যাত্রী বাথরুমে আটকে ছিলেন।
তিনি জানান, বাথরুমে থাকাকালীন তার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হচ্ছিল। বিমানের পাইলট তাকে জোর করে বাথরুম থেকে বের করে আনেন, যার ফলে অন্যান্য যাত্রীদের সামনে তিনি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগে লিব জানিয়েছেন, পাইলট এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা তার ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেন। একই ফ্লাইটে থাকা আরেক যাত্রী জ্যাকব সেগ-ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
তাদের অভিযোগ, হিউস্টনে অবতরণের পর কাস্টমস ও বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) অফিসাররা তাদের আটক করে এবং হেনস্থা করে। এর ফলে তারা নিউ ইয়র্কের সংযোগ ফ্লাইটটি মিস করেন।
বিষয়টি নিয়ে সিবিপির মুখপাত্র হিলটন বেকহাম জানিয়েছেন, “বিমান কর্তৃপক্ষের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ফ্লাইটটিতে ঘটে যাওয়া গোলযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানে মামলা চলমান থাকায় আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে পারছি না।”
অন্যদিকে, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। লিব এবং সেগ-এর আইনজীবীর সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ঘটনার দিন লিব বাথরুমে প্রায় ২০ মিনিটের মতো ছিলেন। এমন সময় বিমানের একজন ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট সেগ-কে ডেকে লিবের বিষয়ে খোঁজ নিতে বলেন।
লিব জানান, তিনি বাথরুমের ভেতরে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন এবং দ্রুতই বের হবেন। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই পাইলট এসে বাথরুমের দরজা ভেঙে ফেলেন এবং লিবকে টেনে বের করেন।
এসময় অন্যান্য যাত্রী ও ক্রু-দের সামনে লিবের গোপনাঙ্গ উন্মোচিত হয়।
এরপর পাইলট তাদের সিটে ফিরে যেতে বলেন এবং তাদের গ্রেফতারের হুমকি দেন। সেই সঙ্গে তাদের ধর্ম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন।
হিউস্টনে অবতরণের পর সিবিপি’র কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের বিমান থেকে নামিয়ে নিয়ে যান এবং তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। লিবের অভিযোগ, আটকের কারণ জানতে চাইলে একজন কর্মকর্তা তার হ্যান্ডকাফ শক্ত করে এবং বলেন, “এটা কোনো রাজ্য বা কাউন্টি নয়, আমরা হোমল্যান্ড। এখানে তোমাদের কোনো অধিকার নেই।”
পরবর্তীতে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স তাদের বিনামূল্যে নিউ ইয়র্কগামী একটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে। তবে, হোটেলে রাত কাটানো এবং খাবারের খরচ তাদের নিজেদের বহন করতে হয়।
বর্তমানে, এই মামলার শুনানি চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সকে বড় অংকের ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন