যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র: সৌদি আরবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনার চেষ্টা। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে আলোচনা শুরু করেছে।
এই লক্ষ্যে মার্কিন প্রতিনিধিদল রিয়াদে পৌঁছেছে এবং রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে। সোমবার সকালে এই বৈঠক শুরু হয় বলে জানা গেছে।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী স্টিভ উইটকফ। অন্যদিকে, রাশিয়ার পক্ষে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন অভিজ্ঞ কূটনীতিক গ্রিগরি কারাসিন এবং সাবেক গোয়েন্দা প্রধান সের্গেই বেসেদা।
বেসেদাকে ইউক্রেন আগ্রাসনের একজন কট্টর সমর্থক হিসেবে মনে করা হয়। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিয়েভ দূত কিথ কেলগের নেতৃত্বে একটি মার্কিন দল ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভের সঙ্গে আলোচনা করে।
উমেরভ এই আলোচনাকে ফলপ্রসূ ও সুসংহত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে প্রত্যাশার ফারাক অনেক।
অন্যদিকে রাশিয়া তাদের শর্তের ব্যাপারে অনড় রয়েছে। একদিকে যেমন যুক্তরাষ্ট্র চাইছে দুই পক্ষের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও যুদ্ধবিরতি হোক।
আলোচনা চলাকালীন সময়েও ইউক্রেনে রাশিয়ার ড্রোন হামলা অব্যাহত ছিল। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে।
রাশিয়া অবশ্য ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে তাদের গ্যাস ও তেল স্থাপনায় হামলার অভিযোগ করেছে। আলোচনায় জটিলতা তৈরি হওয়ার একটি কারণ হলো, উইটকফের কিছু বক্তব্য।
তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কিছু নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে উইটকফ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল – খেরসন, জাপোরিঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘রুশ ভাষাভাষী এলাকা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এর মাধ্যমে তিনি কার্যত রাশিয়ার ওই অঞ্চলগুলোতে অধিকার বিস্তারের বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন। রাশিয়া ২০১৪ সাল থেকে এই অঞ্চলগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং পরবর্তীতে ২০২২ সালে গণভোটের মাধ্যমে এগুলোকে রাশিয়ার অংশ হিসাবে ঘোষণা করে।
যদিও আন্তর্জাতিক মহল এই গণভোটকে স্বীকৃতি দেয়নি। অন্যদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কিয়েভ যদি তাদের সেনাদের পুনরায় সজ্জিত করতে বা অস্ত্র সরবরাহ করতে যুদ্ধবিরতিকে ব্যবহার করতে না দেয়, তবে যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়।
এছাড়া, ইউক্রেনকে কখনো ন্যাটোতে যোগ দিতে না দেওয়ার বিষয়েও তারা তাদের দাবি জানিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ করার দায়িত্ব সেই ব্যক্তির, যিনি এই যুদ্ধ শুরু করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে, শান্তি আলোচনা কতদূর সফল হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তথ্য সূত্র: সিএনএন