ফরাসি চলচ্চিত্র জগতের পরিচিত মুখ অভিনেতা জেরার্ড দেপার্দিয়ুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ২০২১ সালে ‘লে ভোলে ভের্তস’ (The Green Shutters) সিনেমার শুটিং চলাকালীন সময়ে এক নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্যারিসের আদালতে বিচার চলছে তার।
অভিযোগকারী নারীর নাম অ্যামেলি কে।
মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে ৭৬ বছর বয়সী দেপার্দিয়ু অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে, তিনি এটিকে যৌন নির্যাতন হিসেবে মানতে নারাজ।
তাঁর দাবি, ঘটনার সময় তিনি খুব ক্লান্ত ছিলেন এবং অ্যামেলিকে শাসন করার জন্যই এমনটা করেছিলেন। তিনি জানান, শুটিংয়ের শেষের দিকে তিনি কিছুটা বিরক্ত ছিলেন এবং অ্যামেলির কাজে অসন্তুষ্ট ছিলেন।
অন্যদিকে, ৫৪ বছর বয়সী অ্যামেলি কে আদালতে জানান, দেপার্দিয়ু তাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করেছেন এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় দেপার্দিয়ু তাকে দু’পায়ের মাঝে আটকে রেখেছিলেন। অ্যামেলির ভাষ্যমতে, তিনি এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে সেখান থেকে সরতে পারেননি।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে অ্যামেলি জানান, দেপার্দিয়ু তার কাজের কোনো সমালোচনা করেননি। বরং, তিনি বারবার অশ্লীল মন্তব্য করতে থাকেন এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এই ঘটনার তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
দেপার্দিয়ুর আইনজীবী জেরেমি এসোস এই অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি আদালতের কাছে অভিযোগ করেছেন, তদন্তকারীরা দেপার্দিয়ুকে হেয় করার চেষ্টা করছেন।
এই মামলাটি ফ্রান্সের #MeToo আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। দোষী সাব্যস্ত হলে দেপার্দিয়ুর পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে এবং ৭৫,০০০ ইউরো (প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকার বেশি) জরিমানা হতে পারে।
জেরার্ড দেপার্দিয়ু ১৯৮০-এর দশকে ‘দ্য লাস্ট মেট্রো’, ‘পলিশ’ এবং ‘সিরানো ডি বার্গারাক’-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেন। এরপর তিনি ‘গ্রিন কার্ড’ (Green Card) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে হলিউডেও পরিচিতি পান।
পরবর্তীতে তিনি ‘হ্যামলেট’, ‘লাইফ অফ পাই’ এবং নেটফ্লিক্সের ‘মার্সেই’ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। বর্তমানে বিচার প্রক্রিয়া চলছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা