শিরোনাম: মৃগী রোগকে জয় করে ট্র্যাক-এ ফিরছেন জেস ওয়ার্নার-জুড
খেলাধুলার জগৎ সবসময়ই অদম্য ইচ্ছাশক্তির গল্প বলে। তেমনই এক অনুপ্রেরণামূলক কাহিনী পাওয়া যাচ্ছে ব্রিটিশ দৌড়বিদ জেস ওয়ার্নার-জুডের জীবনে। গত বছর ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ১০,০০০ মিটার দৌড়ের সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। এরপর জানা যায়, তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত। কিন্তু এই কঠিন পরিস্থিতিও জেসের মনোবলকে ভাঙতে পারেনি। বরং, তিনি ফিরে আসার জন্য নতুন করে লড়াই শুরু করেছেন, এবং আবারও প্রমাণ করেছেন যে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে সব বাধা জয় করা সম্ভব।
গত জুনে ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০,০০০ মিটার ফাইনালের দৌড় চলার সময় ক্যামেরার সামনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন জেস। দৌড় শেষ করার আগেই ট্র্যাকের ওপর লুটিয়ে পড়েন তিনি। সেই ঘটনার কয়েক দিন পরেই জানা যায়, মৃগী রোগের কারণে এমনটা হয়েছে। এই খবরে তার ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা হতাশ হয়ে পড়েন। তবে জেস জানিয়েছিলেন, তিনি হার মানতে রাজি নন।
চিকিৎসা এবং পরিবারের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন জেস। তার স্বামী রব সবসময় তার পাশে ছিলেন, যিনি নিজেও একজন দৌড়বিদ এবং জেসের প্রশিক্ষণে সাহায্য করেন। এছাড়াও, জেসের ছোট বোন জোডিও মৃগী রোগে আক্রান্ত। বোনের এই লড়াই তাকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। নিয়মিত ঔষধ এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে জেস আবার প্রতিযোগিতায় ফেরার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
শারীরিক এবং মানসিক এই কঠিন সময়ে জেসকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে তার পরিবারের সমর্থন। স্বামী রব সবসময় তার পাশে ছিলেন, এবং বাবা-মা ও বোনের উৎসাহ তাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। ধীরে ধীরে তিনি আবার দৌড় শুরু করেন এবং গত অক্টোবরে একটি ক্রস কান্ট্রি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সেখানে তিনি ভালো ফল করেন, যা তার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেয়।
বর্তমানে জেস তার ট্র্যাক ক্যারিয়ারকে নিজের মতো করে শেষ করতে চান। তিনি আসন্ন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দৌড়ের বাইরেও, জেস তার জীবনের অন্যান্য দিকেও মনোযোগ দিচ্ছেন। তিনি সম্প্রতি ল্যাঙ্কাশায়ারে তার স্বামীর পরিবারের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন, যেখানে তিনি নতুন করে জীবন শুরু করতে চান।
জেস ওয়ার্নার-জুডের এই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প ক্রীড়ামোদী মানুষের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি প্রমাণ করেছেন, প্রতিকূলতা যতই কঠিন হোক না কেন, সঠিক চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে তা জয় করা সম্ভব। তার এই লড়াই শুধু খেলাধুলার জগতে নয়, বরং সকলের জীবনেই নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা যোগায়।
তথ্য সূত্র: The Guardian