**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের প্রতিহিংসাপরায়ণতার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই**
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন দেশটির প্রভাবশালী কয়েকটি ল’ ফার্ম। ট্রাম্প তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজনৈতিকভাবে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হওয়া এইসব ল’ ফার্মের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি বৃহৎ ল’ ফার্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ট্রাম্পের সঙ্গে আপস করেছে।
এর ফলে আইনের শাসনের প্রতি তাদের অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবার, কোনো কোনো ল’ ফার্ম ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো আসলে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং এগুলো অসাংবিধানিক।
জানা গেছে, ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের শায়েস্তা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। বিশেষ করে যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের হেনস্থা করার চেষ্টা করছেন তিনি।
সাবেক বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের সঙ্গে যুক্ত থাকা কয়েকটি ল’ ফার্মের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মুলার ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের তদন্ত করেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে আইনজীবীদের মধ্যে দ্বিধা দেখা দিয়েছে। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান—উভয় দলের আইনজীবীরাই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করছেন।
কিছু ছোট ল’ ফার্ম এরই মধ্যে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে, অনেক বড় ল’ ফার্ম নীরবতা অবলম্বন করেছে, সম্ভবত তারা ট্রাম্পের রোষানল থেকে বাঁচতে চাইছে।
ইতিমধ্যে, দুটি প্রভাবশালী ল’ ফার্ম—জেননার অ্যান্ড ব্লক এবং উইলমারহেইল—ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের অভিযোগ, সরকার তাদের এবং তাদের ক্লায়েন্টদের শাস্তি দিতে অসাংবিধানিক নির্বাহী আদেশ ব্যবহার করছে।
আদালতের প্রাথমিক রায়ে ট্রাম্পের কিছু সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী, অর্থাৎ মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
আদালতে লড়াইয়ের পাশাপাশি, কয়েকটি ল’ ফার্মের সঙ্গে আপস করার খবরও পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে রয়েছে পল, ওয়েইস, হোয়ার্টন, রিফকিন অ্যান্ড গ্যারিসন এবং স্ক্যাডেন আর্পস। তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা করে কিছু শর্ত মেনে নিয়েছে।
অনেকে মনে করছেন, ক্লায়েন্টদের স্বার্থ রক্ষা এবং ব্যবসার ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতেই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
তবে, আপসের এই ধারা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবীরা এই ধরনের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছেন।
তাদের মতে, আইনের শাসনকে সমুন্নত রাখতে হলে, সরকারের অন্যায্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো জরুরি।
বর্তমানে, পরিস্থিতি এখনো স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত আরও কিছু ল’ ফার্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
তবে, শেষ পর্যন্ত কী ঘটবে, তা সময়ই বলবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন