বিড়াল: শান্ত স্বভাবের বিড়াল তৈরি করার কৌশল
বর্তমান সময়ে, বিশেষ করে শহর অঞ্চলে, মানুষের মধ্যে পোষ্য প্রাণী হিসেবে বিড়াল পালনের প্রবণতা বাড়ছে। অনেকেই বাড়িতে একটি আদরের বিড়ালছানা রাখতে পছন্দ করেন।
কিন্তু সব বিড়াল কি একই রকম হয়? কিছু বিড়াল যেমন শান্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ হয়, তেমনই কিছু বিড়াল থাকে একটু ভীতু এবং মানুষের থেকে দূরে থাকতে চায়। আজকের লেখায় আমরা এমন একটি বিড়ালের গল্প নিয়ে আলোচনা করব, যে সহজে মানুষের সঙ্গে মিশতে চাইত না এবং তাকে শান্ত ও সামাজিক করে তোলার চেষ্টা নিয়ে আলোচনা করব।
ছোটবেলায় বিড়ালছানার সামাজিকীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীরা বলেন, জন্মের পর থেকে সাত-আট সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিড়ালছানাদের মানুষের সঙ্গে মিশতে দেওয়া উচিত। এই সময়ে মানুষের সান্নিধ্যে আসার ফলে তারা মানুষের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে শেখে। এই সময়ে তাদের সাথে খেলাধুলা করা, আদর করা এবং খাবার দেওয়া হলে তারা মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
একটি উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, ‘স্প্লিট’ নামক একটি বিড়ালের কথা। স্প্লিট ছিল একটি ভীতু বিড়ালছানা। তার মা ছিল একটু রাগী স্বভাবের। স্প্লিট সহজে মানুষের কাছে ঘেঁষতে চাইত না। তাকে ধরলেই সে ভয় পেত এবং লুকানোর চেষ্টা করত।
স্প্লিটের মালিক তাকে শান্ত করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। তিনি তার সাথে নরম স্বরে কথা বলতেন, খেলনা দেখাতেন, এমনকি খাবারও দিতেন। কিন্তু স্প্লিট কিছুতেই স্বাভাবিক হতে চাইছিল না।
এই পরিস্থিতিতে বিড়াল বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। তাদের মতে, বিড়ালকে জোর করে কোনো কিছু করতে বাধ্য করা উচিত নয়। বরং তাদের নিজেদের মতো করে সময় দিতে হবে এবং তাদের ভয়কে সম্মান করতে হবে।
এক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে ধীরে ধীরে তাদের সাথে মিশতে হবে। তাদের পছন্দের খাবার বা খেলনা দিয়ে আকর্ষণ করা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, স্প্লিটের মালিক তার সাথে শান্তভাবে সময় কাটাতে শুরু করেন। তিনি মেঝেতে বসে বই পড়তেন এবং স্প্লিটকে খাবার দিতেন। প্রথমে স্প্লিট লুকানো অবস্থায় থাকত, কিন্তু ধীরে ধীরে সে খাবারের লোভে কাছে আসত।
এভাবে ধীরে ধীরে স্প্লিট তার মালিকের প্রতি আস্থা অর্জন করতে শুরু করে।
তবে, সব বিড়ালই যে মানুষের সাথে মিশতে পারবে, এমনটা নাও হতে পারে। কিছু বিড়াল স্বভাবতই একটু লাজুক বা ভীতু প্রকৃতির হয়।
তাদের প্রতি ধৈর্য ধরে তাদের পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের ভালোবাসার জন্য জোর করার পরিবর্তে, তাদের নিজেদের মতো করে বেড়ে উঠতে দেওয়া উচিত।
সুতরাং, বিড়ালকে সামাজিক করে তোলার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, ভালোবাসা এবং তাদের নিজস্বতাকে সম্মান করা। প্রত্যেক বিড়ালের নিজস্ব একটি জগৎ আছে, যা তাদের শান্ত ও সুখী রাখতে সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: The Guardian