আশির দশকে সাঁতার কাটতে ভালো না বাসলেও, জলের প্রতি একটা টান সবসময় অনুভব করতেন আন্তোনিয়া মারফি। বয়স যখন ষাটের কোঠায়, তখনও তিনি দ্বিধা করেননি নতুন কিছু শুরু করতে।
৬৬ বছর বয়সে, স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গের রয়্যাল কমনওয়েলথ পুলে গিয়ে ডুব দেওয়া শুরু করেন তিনি। এখন ৬৮ বছর বয়সী আন্তোনিয়া, মাঝ বয়সী নারীদের মতো স্প্রিং বোর্ড থেকে ঝাঁপ দেন, এমনকি ৭.৫ মিটার উঁচু প্ল্যাটফর্ম থেকেও নির্ভয়ে ঝাঁপ দেন।
আশ্চর্য হলেও সত্যি, আন্তোনিয়ার এই নতুন পথের শুরুটা হয়েছিল নিতান্তই আকস্মিকভাবে। এডিনবার্গে আসার পর সেখানকার একটি সুইমিং পুলে যান তিনি।
সেখানকার ডাইভিং পুল দেখে তার চোখ জুড়িয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় তার নতুন যাত্রা। বন্ধুদের উৎসাহ আর প্রশিক্ষকের সঠিক দিকনির্দেশনায়, ধীরে ধীরে তিনি কঠিন সব কৌশল রপ্ত করতে শুরু করেন।
ডাইভিংয়ের জগতে আসার আগে আন্তোনিয়া একজন মনোচিকিৎসক ছিলেন। গণিত ও দর্শনে লিড্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করার পর, তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষকতাও করেছেন।
জীবনের এই পর্যায়ে এসে নতুন কিছু শুরু করার অনুপ্রেরণা কীভাবে পেলেন? আন্তোনিয়া জানান, জীবনের কঠিন সময়ে সাঁতার তাকে সাহস জুগিয়েছে। জলের গভীরে ডুব দেওয়ার সময়, সমস্ত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডাইভিং আন্তোনিয়ার জীবনে শুধু নতুন একটি দিগন্তই উন্মোচন করেনি, বরং দিয়েছে এক নতুন বন্ধুত্বের স্বাদ। পুলের অন্য ডাইভারদের সঙ্গে তার দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
বয়সের ব্যবধান সেখানে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এই প্রসঙ্গে আন্তোনিয়া বলেন, “ডাইভিং বয়স বা লিঙ্গের ভেদাভেদ দূর করে দেয়। এখানে সবাই তাদের সাঁতারের পোশাকে আসে।
মেকআপের কোনো বালাই নেই। সবাই যেন এক কাতারের।”
আন্তোনিয়ার এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, বয়স কোনো বাধা নয়। ইচ্ছাশক্তি থাকলে, যেকোনো বয়সেই নতুন কিছু শেখা সম্ভব। আন্তোনিয়ার এই দুঃসাহসিকতা, আমাদের সকলকে নতুন করে বাঁচতে এবং জীবনকে উপভোগ করতে উৎসাহিত করে।
তথ্য সূত্র: The Guardian