এ্যাড শিরানের নতুন গান ‘আজিজাম’– পারস্য সংস্কৃতির ছোঁয়ায় তৈরি একটি পরীক্ষা, যা কিনা আদতে খুবই ইংরেজি ঘরানার শোনাচ্ছে। সঙ্গীত জগতে পরিচিত এই ব্রিটিশ গায়ক তাঁর নতুন গান নিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন।
তবে এবার আলোচনার কারণ গানের বিষয়বস্তু এবং এর নির্মাণশৈলী নিয়ে তৈরি হওয়া মিশ্র প্রতিক্রিয়া। গানটি তৈরিতে তিনি ইরানীয় বংশোদ্ভূত সুইডিশ প্রযোজক ইলিয়া সালমানজাদেহ’র সঙ্গে কাজ করেছেন।
‘আজিজাম’ ফার্সি শব্দ, যার অর্থ ‘আমার প্রিয়’। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ইরানি র্যাপার স্যাসিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদ্বাস্তুদের নিয়ে গঠিত ‘সিটিজেনস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড কোয়ার’।
গানটি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে সমালোচকরা বলছেন, ‘আজিজাম’–এর সুর এবং সঙ্গীতায়োজনে পারস্য সংস্কৃতির একটি প্রভাব রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
গানের শুরুতে বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ঘাটাম, দফ, এবং সান্তুরের ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু গানটি শোনার পর মনে হয়, যেন এটি পারস্য সুরের আদলে তৈরি হলেও, এর মূল কাঠামোটা পশ্চিমা ঘরানার সঙ্গেই বেশি মেলে।
এ প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। যেমন, আইরিশ লোকসংগীত ঘরানার ‘গ্যালওয়ে গার্ল’ গানের সঙ্গে ‘আজিজাম’-এর মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন।
গানের লয়ে তেহরানের সংস্কৃতির একটি আভাস পাওয়া গেলেও, সত্তরের দশকের গ্ল্যাম ঘরানার সুরের প্রতিধ্বনি যেন বেশি। গানের মাঝে মাঝে একটি ভিন্ন ধারার সুর শোনা যায়, যা হয়তো মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গীতের একটি অংশ।
কিন্তু পুরো গানটি শুনলে, এর মূল কাঠামো, কণ্ঠ এবং বাদ্যযন্ত্রের প্রয়োগে পশ্চিমা ধাঁচের প্রভাব স্পষ্ট হয়। গানের কথায় স্ত্রী’র সঙ্গে নাচের কথা বলা হয়েছে, যা শ্রোতাদের কাছে পরিচিত একটি বিষয়।
এ্যাড শিরান এর আগের অ্যালবামগুলো থেকে ‘আজিজাম’ অনেকটাই আলাদা। এর আগে তাঁর ‘সাবট্রাক্ট’ এবং ‘অটাম ভেরিয়েশনস’ অ্যালবাম দুটি প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে তিনি টেইলর সুইফটের ‘ফোকলোর’ এবং ‘এভারমোর’-এর মতো সুরের ধারা অনুসরণ করেছিলেন।
সেই অ্যালবামগুলো সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এমনকি ‘সাবট্রাক্ট’ অ্যালবামটি ১৩টি দেশে এক নম্বরে ছিল। তবে, ‘আজিজাম’ কতটা শ্রোতাদের মন জয় করতে পারবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না।
কারণ, বর্তমান পপ গানের জগতে এসেছে নতুনত্ব। অনেকে মনে করেন, চার্লি এক্সসিএক্স-এর ‘ব্র্যাট’ এবং চাপেল রোয়ানের মতো শিল্পীরা নতুন ধারার সূচনা করেছেন।
তবে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এ্যাড শিরান এখনো পপ গানের জগতে প্রভাবশালী। নোহ কান, বেনসন বুনের মতো শিল্পীরা তাঁর গানের ধারা অনুসরণ করেন।
এমনকি, এই বছরের ব্রিটিশ পুরস্কার জয়ী মাইলস স্মিথও যেন তাঁর মতোই গান তৈরি করতে চান। সব মিলিয়ে, ‘আজিজাম’ আবারও শীর্ষ তালিকায় জায়গা করে নিতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান