যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত বাণিজ্য শুল্কের কারণে মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল। শুক্রবার ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।
ফেড চেয়ারম্যানের মতে, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি বিস্তৃত।
এর ফলস্বরূপ, বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতির গতিও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাওয়েল বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতি সাময়িকভাবে বাড়তে পারে, তবে এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রায়শই ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন।
সম্প্রতি, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে আবারও সুদের হার কমানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের জন্য সুদের হার কমানোর এটিই উপযুক্ত সময়।” এই ধরনের মন্তব্য ফেডারেলের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রেসিডেন্টের এমন সরাসরি হস্তক্ষেপ রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
ফেডারেল রিজার্ভ হলো যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা দেশের আর্থিক নীতি নির্ধারণ করে থাকে।
এর প্রধান কাজ হলো মূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
সুদের হার কমানো বা বাড়ানো এই নীতি নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সুদের হার কমালে সাধারণত বাজারে ঋণের প্রবাহ বাড়ে, যা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করে।
কিন্তু এর ফলে মুদ্রাস্ফীতিও বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই বাণিজ্য শুল্ক নীতি বিশ্ব অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এর ফলে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
শুল্কের কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বর্তমানে, ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানো হবে কিনা, সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তবে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান