বিশ্বজুড়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)-এর চাহিদা বাড়ার মধ্যে, প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট তাদের কিছু ডেটা সেন্টার প্রকল্পের গতি কমিয়ে দিচ্ছে বা স্থগিত করছে।
এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে ১ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প। প্রযুক্তি খাতে বিশাল বিনিয়োগের পরেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে, চাহিদা এবং অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় কৌশলগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
মাইক্রোসফটের ক্লাউড অপারেশন বিভাগের প্রেসিডেন্ট নোয়েল ওয়ালশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আমাদের ক্লাউড এবং এআই পরিষেবার চাহিদা অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েছে।
এই সুযোগটি কাজে লাগাতে আমরা আমাদের ইতিহাসে বৃহত্তম এবং সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী অবকাঠামো সম্প্রসারণ প্রকল্প শুরু করেছিলাম।
তবে, এই ধরনের বৃহৎ প্রকল্পে আমাদের গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী নমনীয়তা এবং পরিমার্জন প্রয়োজন। তাই আমরা কিছু প্রাথমিক পর্যায়ের প্রকল্পের কাজ ধীরে করছি বা স্থগিত রাখছি।
ওহাইও-এর লিকিং কাউন্টিতে থাকা তিনটি জায়গার মধ্যে দুটিকে মাইক্রোসফট কৃষি খামারের জন্য ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।
যদিও ঠিক কতগুলো প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি মাইক্রোসফট।
তবে জানা গেছে, এর আগে উইসকনসিনে তাদের একটি বড় ডেটা সেন্টার প্রকল্পের পরবর্তী ধাপগুলোও তারা স্থগিত করেছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, মাইক্রোসফটের এই পদক্ষেপের পেছনে তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই-এর সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন একটি কারণ হতে পারে।
ওপেনএআই অত্যাধুনিক এআই সিস্টেম তৈরি করতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে, যার জন্য প্রচুর কম্পিউটিং রিসোর্সের প্রয়োজন।
অন্যদিকে, মাইক্রোসফট সম্ভবত সেই পথে ততটা এগোচ্ছে না।
গত ২১শে জানুয়ারি, মাইক্রোসফট এবং ওপেনএআই তাদের চুক্তিতে পরিবর্তন আনে।
এর ফলে ওপেনএআই নিজস্ব কম্পিউটিং ক্ষমতা তৈরি করতে পারবে, যা মূলত তাদের মডেলগুলোর গবেষণা ও প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হবে।
এআই প্রযুক্তির প্রসারের কারণে ডেটা সেন্টারের চাহিদা বেড়েছে, যা নতুন এআই সিস্টেম তৈরি এবং সেগুলোকে সক্রিয় রাখার জন্য অপরিহার্য।
বিপুল পরিমাণ ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় এবং এর খরচও অনেক।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তারা চলতি অর্থবছরে (যা জুনে শেষ হবে) তাদের এআই অবকাঠামো সম্প্রসারণের জন্য বিশ্বজুড়ে ৮০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
গত তিন বছরে তারা ডেটা সেন্টারের ক্ষমতা দ্বিগুণ করেছে।
তবে, ওহাইও অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় কর্মকর্তাদের জন্য এটি কিছুটা হতাশাজনক।
কারণ, এই অঞ্চলে গুগলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ইন্টেলের মতো সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিও ডেটা সেন্টার তৈরি করছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস