ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে উদ্বিগ্ন এশীয় সুপার মার্কেটের ক্রেতারা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি, বিশেষ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে, সেখানকার এশীয় সুপারমার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করা মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে প্রবাসী এবং এশীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের ওপর।
খবরটি প্রকাশ করেছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনেক এশীয়, বিশেষ করে যারা জাপানি মেয়োনিজ বা চাইনিজ সয়াসসের মতো পছন্দের ব্র্যান্ডগুলোর জন্য পরিচিত সুপারমার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করেন, তারা এই শুল্কের কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাদের আশঙ্কা, দাম বাড়লে দৈনন্দিন বাজার করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এই শুল্ক নীতি অনুযায়ী, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে, যেমন দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়া থেকে আসা পণ্যের ওপর ২৫ থেকে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হয়েছে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর পর দেশটির পণ্যের ওপর শুল্কের হার ১০৪ থেকে ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
যদিও, এই সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা পরেই, চীন বাদে অন্য দেশগুলোর জন্য এই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়।
লস অ্যাঞ্জেলেস এর একটি 99 Ranch Market-এর নিয়মিত ক্রেতা আর্টিস চিটচামনুয়েং জানান, দাম বাড়লে তার পছন্দের খাবারগুলো কেনা কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি মনে করেন, ট্রাম্প বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে আমদানি করা অনেক পণ্যের দাম বাড়বে, যা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য সমস্যা তৈরি করবে। কারণ, তাদের আয়ের একটি বড় অংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের পেছনে খরচ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক সুপারমার্কেটগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এইসব দোকানে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের নুডলস, শুকনো সবজি, ভেষজ এবং স্কিন কেয়ার পণ্য পাওয়া যায়। এই দোকানগুলো অভিবাসী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পরিচিত, কারণ এখানে তারা তাদের দেশের স্বাদ খুঁজে পান।
তবে, এই শুল্ক নীতি শুধু খাদ্যপণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলবে না, বরং এটি ভোক্তাদের পছন্দের পণ্য এবং কেনাকাটার ধরনেও পরিবর্তন আনতে পারে। যেমন, কেউ কেউ হয়তো তাদের পছন্দের ব্র্যান্ডের পরিবর্তে অন্য কোনো বিকল্প বেছে নিতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কেনার প্রবণতা দেখা দিতে পারে, যা বাজারে সংকট তৈরি করতে পারে এবং দাম আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক এবং আমদানি-রপ্তানির বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। চীন ও ভারতের মতো দেশগুলো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো হলে, তা বিশ্ববাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রভাব ফেলতে পারে এবং বাংলাদেশের বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তাই, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন আসছে, তা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস