মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিমালার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার জন্য আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের হ্যামিল্টন কলেজে এক ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান।
ওবামা মনে করেন, ট্রাম্পের নীতিগুলি বাকস্বাধীনতা, শিক্ষা স্বাধীনতা এবং আন্তর্জাতিক রীতিনীতিকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
ওবামা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন কিভাবে সরকার ছাত্র বিক্ষোভ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রোগ্রামের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে।
এছাড়াও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং আইন সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সাবেক প্রেসিডেন্টের ভাষণে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফেডারেল অর্থায়ন বন্ধ করার বিষয়। ট্রাম্প প্রশাসন কিছু শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে তারা ছাত্র-সংগঠনগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচি এবং ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
এমনকী কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগও উঠেছে। ওবামা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের নিজস্ব মূল্যবোধ এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির কথা উল্লেখ করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের সময় ক্যাম্পাসে হওয়া বিক্ষোভের কারণে ফেডারেল তদন্তের সম্মুখীন হয়েছে।
অভিবাসন কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিবাসন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন এবং তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছেন।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তাদের নীতি পরিবর্তন করতে হয়েছে, যার মধ্যে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়োগ এবং একাডেমিক ভবনগুলোতে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।
ওবামা কর্পোরেট ল ফার্মগুলির সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, যারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জড়িত ছিলেন, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে কিছু ল ফার্মকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া, একটি সংবাদ সংস্থা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে হোয়াইট হাউস বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে বাধা দেয়, কারণ এপি মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ রাখার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
ওবামা মনে করেন, এখন সময় এসেছে যখন শুধু কোনো কিছুর পক্ষে কথা বললেই চলবে না, বরং সেই অনুযায়ী কাজও করতে হবে।
তিনি আমেরিকান নাগরিকদের, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইন সংস্থাগুলোকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান