যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জন্য ‘রক্তক্ষয়ী’ ফলাফলের আশঙ্কা করছেন টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি যদি মন্দা ডেকে আনে, তবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
সিনেটর ক্রুজের মতে, এর ফলস্বরূপ ডেমোক্র্যাটরা কংগ্রেসের উভয় কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সিনেটররা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং তারা কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে দায়িত্ব পালন করেন।
মধ্যবর্তী নির্বাচনগুলো সাধারণত প্রেসিডেন্টের মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটিকে প্রেসিডেন্টের কাজের মূল্যায়ণ হিসেবে দেখা হয়।
সিনেটর ক্রুজের উদ্বেগের কারণ হলো, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি, যা আমদানি পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করে, এর ফলে অন্যান্য দেশগুলো পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মারাত্মক ক্ষতি করবে এবং চাকরিহানির কারণ হবে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তার দীর্ঘকাল ধরে এই শুল্ক বহাল রাখার ইচ্ছা রয়েছে।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান সিনেটর চাক গ্রাসলি এবং ডেমোক্রেট সিনেটর মারিয়া কান্তওয়েলের যৌথ উদ্যোগে একটি বিল আনা হয়েছে, যেখানে শুল্ক নীতি নির্ধারণে কংগ্রেসের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বিলের সহ-পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে রয়েছেন রিপাবলিকান সিনেটর লিসা মুরকোওস্কি, মিচ ম্যাককনেল, জেরি মোরান এবং থম টিলিস।
যদিও এই বিলটিকে মূলত প্রতীকী হিসেবে দেখা হচ্ছে, তবে এটি বাণিজ্য নীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
সিনেটর ক্রুজ সতর্ক করে বলেন, দীর্ঘমেয়াদে শুল্ক এবং বাণিজ্য যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এর ফলে, ২০২৬ সালের নির্বাচনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে, যা রিপাবলিকানদের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, যদি সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিক দুর্দশার শিকার হন, তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি তাদের অসন্তুষ্টি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সিনেটর ক্রুজ প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি চান এই নীতি সফল হোক। তবে, তার মতে সাফল্যের সংজ্ঞা হয়তো হোয়াইট হাউসের থেকে ভিন্ন।
তার মতে, অন্য দেশগুলোর শুল্ক হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। এর মাধ্যমে আমেরিকান শ্রমিক, ব্যবসা এবং সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নতি সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং রেমিট্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। অর্থনীতিবিদরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান