যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি নিয়ে তাঁর প্রশাসনের মধ্যেই বিভেদ দেখা দিয়েছে। এই নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে বাজারগুলোতেও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
একদিকে যখন ট্রাম্প এই শুল্ক নীতিকে সমর্থন করছেন, তখন তাঁর দলের প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক এই শুল্ক নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন।
গত সপ্তাহে, ট্রাম্প প্রশাসন তার বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন এনে বেশ কয়েকটি দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ার বাজার সূচকগুলোতে বড় ধরনের পতন হয়েছে।
ডাউ জোন্স, এসএন্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক-এর মতো সূচকগুলো উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
ইলন মাস্ক মনে করেন, শুল্কের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল তৈরি করা উচিত। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার মতে, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল তৈরি করা উচিত।”
মাস্কের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো মাস্কের সমালোচনা করে বলেন, মাস্ক আসলে নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থের কথা চিন্তা করে এমনটা বলছেন, কারণ তিনি গাড়ি বিক্রি করেন।
অন্যদিকে, বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড ল্যাটনিক বলেছেন, এই শুল্কগুলি “কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ” বহাল থাকবে।
তবে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ৫০টির বেশি দেশ শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে।
এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, শুল্ক নীতি বহাল থাকবে, আবার কেউ বলছেন, আলোচনা চলছে। এই দ্বিধা-বিভক্তির কারণে বাজারের অস্থিরতা আরও বাড়ছে।
এই শুল্ক নীতির সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের একটি বড় অংশ রপ্তানি হয়।
শুল্ক আরোপ হলে, সেই রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং দেশের অর্থনীতিতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়াও, বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বাণিজ্যনীতি আরো সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করতে হবে।
দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে হলে, আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য।
তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।