বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের আবহে শীর্ষ ধনীদের সম্পদ কমেছে, ক্ষতির মুখে ট্রাম্পের মিত্ররা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার জেরে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের ওপর। এই ধাক্কায় বিপুল পরিমাণ সম্পদ খুইয়েছেন ট্রাম্পের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পর শেয়ারবাজারে দরপতনের কারণে বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ জন ধনীর সম্মিলিতভাবে ৫৩৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন কয়েকজন শীর্ষ ধনীর মধ্যে রয়েছেন যারা একসময় ট্রাম্পকে সমর্থন জুগিয়েছেন বা তার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন – টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক, মেটা’র (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ) প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ, অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এবং বিলাসবহুল পণ্যের ব্র্যান্ড এলভিএমএইচের মালিক বার্নার্ড আর্নল্ট।
শেয়ারবাজারে দরপতনের কারণে ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত তার প্রায় ১৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
যদিও এখনো তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনী হিসেবে বহাল রয়েছেন, তবে ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় তিনি সবার উপরে। একই সময়ে, মেটা’র শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় মার্ক জাকারবার্গের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি। জেফ বেজোসের সম্পদ কমেছে ২৩.৫ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে, বার্নার্ড আর্নল্টের ক্ষতির পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
তবে এই বাজারের অস্থিরতার মধ্যেও একজন শীর্ষ ধনী উল্লেখযোগ্যভাবে লাভবান হয়েছেন। তিনি হলেন ওয়ারেন বাফেট।
যদিও শেয়ারবাজারে দরপতনের প্রথম দিকে তারও সামান্য ক্ষতি হয়েছিল, তবে বছর শেষে তার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। বাফেটের মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ১৫৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির কারণে মূলত এশিয়ার দেশগুলোতে উৎপাদিত পণ্যের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি এবং পোশাক শিল্পের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
অনেক বড় বড় কোম্পানি, যারা তাদের উৎপাদন এবং কম্পিউটার চিপস, আইটি সেবার জন্য এশিয়ার বাজারের ওপর নির্ভরশীল, তারা এই শুল্কের কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ব বাজারের এই অস্থিরতা আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে প্রভাবিত করতে পারে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তাই, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং শুল্ক নীতি পরিবর্তনের দিকে আমাদের বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian