যুক্তরাষ্ট্রে আবহাওয়ার ভিন্ন রূপ, একদিকে শীতের কামড়, অন্যদিকে গ্রীষ্মের তাপ।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে এক অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, যেখানে শীতের আমেজ ফিরে এসেছে। অন্যদিকে, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে গ্রীষ্মের তীব্রতা বাড়ছে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের পর, দেশটির পূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। অনেক স্থানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি চলে এসেছে, যা মার্চ মাসের শুরুর দিকের আবহাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। আবহাওয়ার এই হঠাৎ পরিবর্তনে সেখানকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বাড়ছে।
বিশেষ করে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ঠাণ্ডার কারণে হাইপোথার্মিয়ার (শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়া) ঝুঁকি বাড়ছে।
কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, “যারা বন্যা কবলিত এলাকায় বাস করছেন, তাদের জন্য রাতের বেলা আশ্রয় নেওয়াটা খুবই জরুরি। শুকনো ও উষ্ণ থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।
শুধু কেনটাকি নয়, টেনেসিতেও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি নেমে যেতে পারে। টেক্সাস থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০-এর ঘরে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়ার এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সেখানকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
অন্যদিকে, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। সেখানে গ্রীষ্মের তীব্রতা বাড়ছে এবং তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে শুরু করে রকি পর্বতমালা পর্যন্ত অনেক অঞ্চলে বসন্তের শেষ বা গ্রীষ্মের শুরুর মতো আবহাওয়া বিরাজ করছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বায়ুমণ্ডলের একটি বড় পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। কানাডা থেকে আসা শীতল বাতাস পূর্বাঞ্চলে প্রভাব ফেলছে, আর মেক্সিকো থেকে আসা উষ্ণ বাতাস পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে।
উদাহরণস্বরূপ, ফিনিক্স শহরে তাপমাত্রা প্রথমবারের মতো ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস)-এ পৌঁছতে পারে, যা সাধারণত মে মাসের শুরুতে হয়ে থাকে। এছাড়া, লাস ভেগাসেও তাপমাত্রা ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত উঠতে পারে। ডেনভারেও তাপমাত্রা বেড়ে ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই আবহাওয়ার পরিবর্তন সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। একদিকে শীতের তীব্রতা, অন্যদিকে তাপপ্রবাহ—উভয়ই সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন