যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ আরও একধাপ এগিয়েছে, যেখানে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়া হয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আরও বেশি শুল্ক বসানোর কথা বলেছেন, যার প্রতিক্রিয়ায় চীনও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এই ঘটনা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে এবং এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারেও পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করে দেশটির ওপর নতুন করে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে। এর জবাবে চীন বলেছে, তারা শেষ পর্যন্ত এই লড়াই চালিয়ে যাবে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপকে “ব্ল্যাকমেল” হিসেবে অভিহিত করেছে এবং বলেছে যে এটি “ভুল সিদ্ধান্তের ওপর আরও একটি ভুল”। তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ারও অঙ্গীকার করেছে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধ “আগে বাড়ো, পরে দেখো” অবস্থার মতো। উভয় দেশই চাইছে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে, যার ফলে বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে, অন্যান্য দেশও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে শুরু করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মার্কিন কিছু পণ্যের ওপর পাল্টা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে।
তাইওয়ানও এই বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে আলোচনায় বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এখনো দৃশ্যমান না হলেও, এর কিছু পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের আমদানি খরচকে প্রভাবিত করবে।
বিশেষ করে, পোশাক শিল্পের কাঁচামাল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়লে, তা দেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগও সৃষ্টি হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য হ্রাস পেলে, বাংলাদেশ তার রপ্তানি বাজার প্রসারিত করতে পারে।
বিশেষ করে, তৈরি পোশাক, চামড়া ও পাটজাত পণ্যের মতো খাতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সুবিধা পেতে পারেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা বাড়ছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ। তবে, সঠিক নীতি গ্রহণ এবং বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে, বাংলাদেশ এই পরিস্থিতি থেকে সুবিধা পেতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে বাণিজ্য নীতিকে আরও শক্তিশালী করা এবং নতুন বাজার অনুসন্ধানের ওপর জোর দেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান