পোপ ফ্রান্সিসের অসুস্থতার কারণে এবারের ইস্টার উদযাপন কিছুটা ভিন্ন হতে চলেছে। গুরুতর অসুস্থতার কারণে তিনি এবার সরাসরি অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না, যা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।
ঐতিহ্যগতভাবে, এই সময়ে পোপ নিজে গুরুত্বপূর্ণ আচার-অনুষ্ঠানগুলোতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু সম্প্রতি ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে বিশ্রাম নিতে হচ্ছে।
ভ্যাটিকান সূত্রে খবর, পোপ ফ্রান্সিস বর্তমানে সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলছেন। তিনি নিজে সরাসরি জনসাধারণের সামনে দীর্ঘ সময় কথা বলতে পারছেন না।
এই কারণে, ইস্টার উপলক্ষে আয়োজিত কিছু অনুষ্ঠানে কার্ডিনালদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, জানা গেছে, ‘ওয়ে অফ দ্য ক্রস’ সহ অন্যান্য প্রার্থনাসভার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিগুলো তিনি নিজেই করেছেন।
পোপ ফ্রান্সিস তাঁর স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেও ইস্টার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আগ্রহী। এরই মধ্যে তিনি ইতালির একটি কারাগারে গিয়ে বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সেখানে তিনি জানান, এবারকার ইস্টার অনুষ্ঠানে তিনি সরাসরি অংশ নিতে পারবেন না, তবে তিনি সবার কাছে প্রার্থনা কামনা করেন। কারাগারে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমি সবসময় ভাবি, কেন ওরা এখানে আর আমি বাইরে? আমি তাদের জন্য এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করি।”
এদিকে, খবর পাওয়া যাচ্ছে, এই পবিত্র সময়ে ভ্যাটিকান পরিদর্শনে যাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভেন্স। যিনি ২০১৯ সালে ক্যাথলিক ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ইস্টার উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সময়ে তাঁর সেক্রেটারি অফ স্টেট কার্ডিনাল পিয়েত্রো পারোলিনের সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
পোপের অসুস্থতার কারণে ভাইস প্রেসিডেন্টের এই সফরটি কূটনৈতিক দিক থেকেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অভিবাসন নীতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে পোপ ফ্রান্সিস এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, পোপ অভিবাসন নীতি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেছিলেন।
ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পোপের শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইস্টার সানডের বিশেষ প্রার্থনাসভায় তিনি উপস্থিত থাকতে পারেন এবং ‘উরবি এত অরবি’ (শহর ও বিশ্বের প্রতি) ভাষণ দিতে পারেন।
উল্লেখ্য, এই ভাষণটি কেবল পোপই দিয়ে থাকেন।
সবকিছু বিবেচনা করে, পোপ ফ্রান্সিসের এই অসুস্থতা এবং আসন্ন ইস্টার উদযাপন উভয় দিক থেকেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারা বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর মানুষজন তাঁর সুস্থতা কামনা করছেন এবং এই বিশেষ দিনে তাঁর ভাষণ শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন