যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অভিবাসীদের বিতাড়ন (Deportation) সংক্রান্ত একটি নীতি বহাল রেখেছে, তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে। আদালত জানিয়েছে, সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের ভেনেজুয়েলায় ফেরত পাঠানোর জন্য ১৭৯৮ সালের একটি পুরোনো আইন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে।
তবে বিতাড়ন সংক্রান্ত কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ ওয়াশিংটন ডিসিতে (Washington DC) নয়, বরং টেক্সাসে (Texas) করতে হবে, যেখানে ওই অভিবাসীদের আটক রাখা হয়েছে।
আদালতের পাঁচ বিচারপতির মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে এই রায় আসে। আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসি-ভিত্তিক একজন বিচারকের স্থগিতাদেশ তুলে নেয়, যিনি বিতাড়ন প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে আদালত সরাসরি এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া সঠিক ছিল কিনা, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তাদের মতে, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার টেক্সাস আদালতের।
আদালত বিতর্কিত এই আইনের অধীনে বিতাড়ন প্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বিতাড়ন করার আগে আটককৃতদের অবশ্যই যথাযথভাবে নোটিশ দিতে হবে। তাদের আইনি অধিকার সম্পর্কে অবগত করতে হবে এবং বিতাড়নের আগে টেক্সাসের উপযুক্ত আদালতে তাদের রিট করার সুযোগ দিতে হবে।
এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনের শাসনকে সমর্থন করেছে, যা দেশের সীমান্ত সুরক্ষা এবং পরিবার ও দেশকে রক্ষার জন্য জরুরি।
আদালতে বর্তমানে ৬ জন রক্ষণশীল বিচারক রয়েছেন, যেখানে তিনজন উদারপন্থী বিচারক এই রায়ের বিরোধিতা করেছেন। জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন ‘ট্রেন দে আরাগয়া’ গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্রুত বিতাড়নের জন্য এই আইন ব্যবহার করতে চেয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই আইন ব্যবহার করে জাপানি, ইতালীয় এবং জার্মান অভিবাসীদের আটক করা হয়েছিল।
তবে বিতাড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বজনদের গ্যাং সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন ফুটবল খেলোয়াড়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেলকে একটি ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসার কারণে দেওয়া একটি ক্রাউন ট্যাটুর জন্য গ্যাং সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: The Guardian