1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
May 2, 2025 6:35 PM
সর্বশেষ সংবাদ:
রাসেল ব্র্যান্ড: আদালতে হাজির, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে! নারী ক্রিকেটে বড় সিদ্ধান্ত! ট্রান্সজেন্ডার নারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা ভিটামিন ডি: শরীরে এর অভাব কতটা উদ্বেগের? যুদ্ধ নিয়ে ভান্সের বিস্ফোরক মন্তব্য! শীঘ্রই কি শান্তি আসছে না? গির্জার বেদিতে সুস্থ জীবন! অভিবাসীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ ব্রুনসনের জাদুকরী জয়, প্লে-অফে সিজিল করল নিউ ইয়র্ক! অবিশ্বাস্য ছাড়! এখনই কিনুন, 73% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে সেরা জিনিস! প্রকাশ্যে: বোন কারেনের ভয়ঙ্কর শেষ মুহূর্তের কথা জানালেন কেলেসি গ্রাহামার! নিউজিল্যান্ডে: পৃথিবীর নতুনতম ‘ডার্ক স্কাই’ স্থান, যা আপনাকে মুগ্ধ করবে! ও’স৷লিভ৷ন৷ক ধূলিস্যাৎ ক৷র জাওয়৷র৷র৷ ক৷র৷ম৷তি!

পানীয় জলের ফ্লোরাইড নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত! আপনার জানা দরকার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Wednesday, April 9, 2025,

পানীয় জলে ফ্লোরাইড: স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা

দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফ্লোরাইডের গুরুত্ব অনেক। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগের সেক্রেটারি রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রকে (Centers for Disease Control and Prevention – CDC) পানীয় জলে ফ্লোরাইড মেশানোর সুপারিশ বন্ধ করতে বলার কথা জানিয়েছেন। কেনেডি জুনিয়রের এমন মন্তব্যের কারণ হলো, সম্প্রতি ইউটাতে এই অনুশীলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ফ্লোরাইড হলো একটি প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান, যা মাটি, গাছপালা, জল এবং খাবারে সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট পরিমাণে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অনেক দেশেই শিশুদের জন্য ফ্লোরাইডের সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। কোনো কোনো দেশে পানির সঙ্গে, আবার কোনো দেশে দুধ বা লবণের সঙ্গে ফ্লোরাইড মেশানো হয়।

এছাড়া, স্কুলগুলোতে ফ্লোরাইডযুক্ত মাউথওয়াশ এবং বার্নিশ ব্যবহারেরও প্রচলন রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরাইডেশনের ইতিহাস

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৫ সাল থেকে জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পানির সঙ্গে ফ্লোরাইড মেশানো শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC) এটিকে বিংশ শতাব্দীর সেরা দশটি স্বাস্থ্য বিষয়ক পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা এবং নিরাপদ কর্মক্ষেত্রের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ ফ্লোরাইডযুক্ত পানি পান করে। তবে, রাজ্য ভেদে এই হার ভিন্ন।

যেমন, হাওয়াই রাজ্যে মাত্র ৮.৫ শতাংশ মানুষ ফ্লোরাইডযুক্ত পানি পান করে, যেখানে ওয়াশিংটন ডিসিতে এই হার ১০০ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে পানিকে ফ্লোরাইডযুক্ত করা বাধ্যতামূলক নয়। সিডিসি পানীয় জলে প্রতি লিটারে ০.৭ মিলিগ্রাম ফ্লোরাইড মেশানোর সুপারিশ করে, তবে এটি কোনো আইনগত মানদণ্ড নয়।

স্থানীয় পর্যায়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পানির স্বাভাবিক ফ্লোরাইডের পরিমাণের ওপর তা নির্ভর করে।

যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরাইডের মাত্রা

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬টি রাজ্যের প্রায় ৩৭ হাজার জল সরবরাহ ব্যবস্থার তথ্য সিডিসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। ২০২৩ সাল পর্যন্ত, এই তথ্যভাণ্ডারের অন্তর্ভুক্ত জল সরবরাহ ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে ৩৭ শতাংশে ফ্লোরাইড মেশানো হয়।

রাজ্য ভেদে এর পরিমাণে ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন, কেন্টাকিতে ৯৩.৮ শতাংশ জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ফ্লোরাইড মেশানো হয়, যেখানে আলাস্কায় এই হার মাত্র ৩.৭ শতাংশ।

বিভিন্ন জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ফ্লোরাইডের পরিমাণেও বেশ পার্থক্য রয়েছে। সব রাজ্য তাদের জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ফ্লোরাইডের মাত্রা জানায় না।

যে ২৪টি রাজ্য তথ্য সরবরাহ করে, তাদের ১,৭৭৪টি জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ফ্লোরাইডের মাত্রা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫৩ শতাংশ জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ফ্লোরাইডের ঘনত্ব প্রস্তাবিত মাত্রায় (প্রতি লিটারে ০.৭ থেকে ১.২ মিলিগ্রাম) রয়েছে।

প্রায় ৪৭ শতাংশ ক্ষেত্রে, ফ্লোরাইডের ঘনত্ব সিডিসির প্রস্তাবিত মাত্রার চেয়ে কম।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization – WHO) নির্দেশিকা অনুযায়ী, পানীয় জলে ফ্লোরাইডের পরিমাণ প্রতি লিটারে ১.৫ মিলিগ্রামের বেশি হলে স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের দুটি জল সরবরাহ ব্যবস্থায়, যা দক্ষিণ ক্যারোলিনায় অবস্থিত, ফ্লোরাইডের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অতিক্রম করেছে।

ফ্লোরাইডযুক্ত পানি কি সত্যিই উপকারী?

দীর্ঘদিন ধরেই দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী করতে ফ্লোরাইডের উপকারিতা জানা যায়। সিডিসি’র মতে, ফ্লোরাইড মেশানোর ফলে শিশুদের দাঁতের ক্ষয় (cavities) ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

দাঁতের ক্ষয় হলে ব্যথা ও সংবেদনশীলতা বাড়ে, যা কথা বলা ও খাবার গ্রহণে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া, দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তা শরীরের অন্যান্য অংশেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে, যা গুরুতর অসুস্থতা বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

তবে, অতিরিক্ত ফ্লোরাইড শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, উচ্চ মাত্রায় ফ্লোরাইড গ্রহণের ফলে দাঁতের এনামেল এবং হাড়ের দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।

একে ‘স্কেলিটাল ফ্লুরোসিস’ বলা হয়, যা হাড় দুর্বল করে এবং জয়েন্টগুলোতে ব্যথা সৃষ্টি করে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্লোরাইডযুক্ত পানি দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং মুখের স্বাস্থ্য উন্নত করে। ২০১০ সালের একটি গবেষণায়, ফ্লোরাইডযুক্ত পানি ব্যবহার করা হয় এমন অঞ্চলে বসবাসকারীদের মধ্যে দাঁতের ক্ষয়, দাঁত তোলা বা ফিলিং করার প্রবণতা কম দেখা গেছে।

২০১১ সালে, কানাডার ক্যালগারি শহর ফ্লোরাইড মেশানো বন্ধ করে দেয়। পরে, এডমন্টনের শিশুদের সঙ্গে ক্যালগারির শিশুদের তুলনা করে দেখা যায়, ক্যালগারির শিশুদের দাঁতের ক্ষয় বেশি হয়েছে।

অন্যদিকে, এমন কিছু গবেষণা রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, মুখের স্বাস্থ্যবিধি এবং দন্তচিকিৎসার উন্নতির কারণে ফ্লোরাইডযুক্ত পানির উপকারিতা কমেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পানিকে ফ্লোরাইডযুক্ত করা দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে, তবে আগে যা ধারণা করা হতো, তার চেয়ে কম।

কারণ, আজকাল টুথপেস্ট ও মাউথওয়াশে ফ্লোরাইডের ব্যবহার বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক চিত্র

১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে দাঁতের ক্ষয় কমেছে, এমনকি যে দেশগুলোতে পানিতে ফ্লোরাইড মেশানো হয় না, সেখানেও এই প্রবণতা দেখা যায়।

যুক্তরাজ্যে, ম্যানচেস্টার ও ব্ল্যাকপুলে স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্লোরাইডযুক্ত দুধ সরবরাহ করার কর্মসূচি রয়েছে। দেশটির প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ প্রাকৃতিক অথবা স্থানীয় ফ্লোরাইড প্রোগ্রামের মাধ্যমে ফ্লোরাইডযুক্ত পানি পান করে।

আইসল্যান্ডে, পানিতে ফ্লোরাইড মেশানো হয় না, তবে স্কুলগুলোতে ফ্লোরাইডযুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে শিশুরা মাসে দুবার এই মাউথওয়াশ ব্যবহার করে।

জাপানেও ১৯৭০ সাল থেকে স্কুলগুলোতে ফ্লোরাইডযুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহারের কর্মসূচি শুরু হয়, যা বর্তমানে কিন্ডারগার্টেন পর্যন্ত বিস্তৃত। গবেষণায় দেখা গেছে, অল্প বয়সে এই ধরনের কর্মসূচি শুরু করলে দাঁতের ক্ষয় কমাতে এটি বেশি কার্যকর হয়।

ইতালিতে, শিশুদের জন্য টুথব্রাশ করার সময় ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার, চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়ের পরিমাণ কমানোর মতো পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এছাড়া, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য তাদের বয়সের ভিত্তিতে ফ্লোরাইড ট্যাবলেট, বার্নিশ, জেল বা সিল্যান্ট ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।

অতিরিক্ত ফ্লোরাইড গ্রহণের ক্ষতিকর দিক

এ বছর মে মাসে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ফ্লোরাইড গ্রহণের ফলে শিশুদের মধ্যে স্নায়ু বিষয়ক সমস্যা (neurobehavioral problems) বাড়তে পারে।

আগস্টে, বিদ্যমান গবেষণা পর্যালোচনা করে জানা গেছে, উচ্চ মাত্রায় ফ্লোরাইড গ্রহণের ফলে শিশুদের বুদ্ধিমত্তার (IQ) পরিমাণ কমতে পারে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত এই ধরনের উচ্চ মাত্রা দেখা যায় না।

পানি বিশেষজ্ঞ জন ফাওয়েল সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ফ্লোরাইড সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায় এবং পরিবারদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, যারা ডেন্টাল স্বাস্থ্যবিধি এবং ডেন্টাল পরিষেবা গ্রহণে অক্ষম বা অনিচ্ছুক।” তিনি আরও যোগ করেন, “কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কম ঘনত্বে ফ্লোরাইড ব্যবহারের ফলে শিশুদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তার সামান্য হ্রাস হতে পারে।

তবে, এর কোনো সুস্পষ্ট কারণ জানা যায়নি, তাই এটি একটি সম্পর্ক, যা সবসময় কার্যকারিতা প্রমাণ করে না।”

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে

বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফ্লোরাইডের গুরুত্ব বিবেচনা করা যেতে পারে। আমাদের দেশে দাঁতের সমস্যার প্রকোপ কেমন, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন।

সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা জানা দরকার। টুথপেস্ট বা অন্য কোনো মাধ্যমে ফ্লোরাইডের ব্যবহার সম্পর্কেও সচেতনতা বাড়ানো যেতে পারে।

এছাড়া, ফ্লোরাইডের মাত্রা এবং এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সঠিক ধারণা তৈরি করা জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT