মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। সম্প্রতি, মার্কিন শেয়ার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, কারণ শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউস।
এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
মঙ্গলবার, বাজারের শুরুতে কিছুটা উত্থান দেখা গেলেও, শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর তা দ্রুত হ্রাস পায়। ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ (Dow Jones Industrial Average) সূচকটি প্রায় ০.৬% কমে যায়, এস&পি ৫০০ (S&P 500) সূচক ১.৩% এবং প্রযুক্তি খাতের সূচক নাসডাক কম্পোজিট (Nasdaq Composite) ১.৮% পর্যন্ত হ্রাস পায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর অন্তত ১০৪% শুল্ক ধার্য করা হবে।
বাজারের এই অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি করেছে, কারণ বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিও পুনরায় মূল্যায়ন করতে পারেন। কারণ, বাজারের এই অবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে তা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের অর্থনীতিও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। কারণ, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে।
যদি এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ তীব্র হয়, তবে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের উপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
এছাড়া, রেমিট্যান্স প্রবাহেও বাধা সৃষ্টি হতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ।
বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে দেশের বাণিজ্য নীতিকে আরও সুসংহত করতে হবে এবং বিকল্প বাজার অনুসন্ধানের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
একইসঙ্গে, বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
বর্তমানে, উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধের অবসান ঘটাতে আলোচনা চলছে। তবে, এই আলোচনা কত দ্রুত ফলপ্রসূ হবে, তা বলা কঠিন।
ফলে, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সম্ভাব্য খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: CNN