যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি প্রস্তাব করেছেন, দেশটির একটি গুরুত্বপূর্ণ ছুটির দিন ‘ভেটেরান্স ডে’-র নাম পরিবর্তন করে ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবস’ করার। একইসঙ্গে, তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় উদযাপনের জন্য ৮ই মে তারিখটিকে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করারও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প তার ‘সোশ্যাল মিডিয়া’ প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে জানান, “আমরা উভয় যুদ্ধেই জিতেছি। শক্তি, সাহস অথবা সামরিক দক্ষতার দিক থেকে আমাদের ধারে কাছেও কেউ ছিল না, কিন্তু আমরা কিছুই উদযাপন করি না—কারণ আমাদের আর সেই ধরনের নেতৃত্ব নেই যারা এটা করতে জানে!”
সাধারণভাবে, ১১ই নভেম্বর তারিখটিতে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ভেটেরান্স ডে’ পালন করা হয়। এই দিনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসানের দিনটিকে স্মরণ করা হয়।
১৯১৮ সালের এই দিনে (১১ই নভেম্বর) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেছিল। শুরুতে দিনটি ‘যুদ্ধবিরতি দিবস’ হিসেবে পালিত হতো, যা বিশ্ব শান্তি এবং বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈন্যদের প্রতি উৎসর্গীকৃত ছিল।
পরবর্তীতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও কোরীয় যুদ্ধের পর এই দিবসের ধারণা আরও বিস্তৃত করা হয় এবং এটিকে সকল মার্কিন সেনার প্রতি উৎসর্গ করে ‘ভেটেরান্স ডে’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে, অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে, ৮ই মে তারিখটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবস হিসেবে কতটা সঠিক? কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির আত্মসমর্পণের ফলে ইউরোপে যুদ্ধ শেষ হলেও, জাপানে তখনও যুদ্ধ চলছিল।
১৯৪৫ সালের ২রা সেপ্টেম্বর, জাপানের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেছিল। এই দিনটিকে ‘ভি-জে ডে’ বা ‘বিজয় দিবস’ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে মে মাসের শেষ সোমবার ‘মেমোরিয়াল ডে’ পালন করা হয়। এই দিনে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সৈন্যদের প্রতি সম্মান জানানো হয়।
এই ছুটির দিনটি মূলত যুদ্ধাহত সৈন্যদের স্মরণ ও তাদের প্রতি উৎসর্গীকৃত।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিদ্যমান ছুটির দিনগুলোর তাৎপর্য এবং এর পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এই ধরনের প্রস্তাবনা প্রায়শই রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দেয় এবং দেশটির জনগণের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন