যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে উত্থান, চীন থেকে ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা।
যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে, মার্কিন শেয়ার বাজারে সোমবার কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। এর কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন চীন থেকে আমদানি করা কিছু ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর সাময়িক শুল্ক ছাড় ঘোষণা করেছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রযুক্তি নির্ভর “ডাও”, এসএন্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচকে উল্লেখযোগ্য হারে উত্থান দেখা যায়।
শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষের দেওয়া এক নোটিশে জানা যায়, স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে। এর পরেই বিনিয়োগকারীরা বাজারে সক্রিয় হন, যার ফলস্বরূপ শেয়ারের দাম বাড়ে।
তবে, এই ছাড়ের ফলে বাজারের এই ঊর্ধ্বগতি কত দিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক ছাড় একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ। বাণিজ্য বিষয়ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ছাড় মূলত একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, যা বাণিজ্য যুদ্ধের জটিলতা কিছুটা কম করতে সহায়তা করবে।
বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লু summary, ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক মওকুফ করা হলেও, সেমিকন্ডাক্টর খাতে শুল্ক বহাল থাকবে। এই সেমিকন্ডাক্টর শুল্ক সম্ভবত এক বা দুই মাসের মধ্যে কার্যকর হতে পারে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, মার্কিন অর্থনীতিতে মন্দা আসার আশঙ্কা বাড়ছে। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং বিশ্লেষকরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
গোল্ডম্যান স্যাকসের প্রধান নির্বাহী ডেভিড সলোমন বলেছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে বাজারের পরিস্থিতি ‘অনেকটা ভিন্ন’ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, বিলিয়নেয়ার রে ডালিও মনে করেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি আমেরিকার অর্থনীতিকে সম্ভবত মন্দার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, অথবা এর চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারে।
বাজারের এই অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে, সোনার দাম বাড়ছে।
চলতি বছরে সোনার দাম ২১ শতাংশের বেশি বেড়েছে এবং বর্তমানে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩,২০০ ডলারের বেশি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা অব্যাহত থাকলে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে।
সিটি গ্রুপের বিশ্লেষকরা এসএন্ডপি ৫০০ এর জন্য তাদের বছরের শেষ লক্ষ্যমাত্রা ৬,৫০০ থেকে কমিয়ে ৫,৮০০ করেছেন, যা বাজারের এই অস্থিরতার প্রতিফলন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক ছাড় বাজারের জন্য ইতিবাচক হলেও, এটি দীর্ঘমেয়াদে কতটা কার্যকর হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
বাজারের এই অনিশ্চয়তা ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করেছে এবং তারা কিভাবে বিনিয়োগ করবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
এর ফলে, মার্কিন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মোটকথা, ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর সাময়িক শুল্ক ছাড়ের ফলে শেয়ার বাজারে কিছুটা উন্নতি হলেও, বাণিজ্য যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এখনো বিদ্যমান।
এই পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বাজারের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।