মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA) সরকারের বিরুদ্ধে সাইবার হামলার গুরুতর অভিযোগ এনেছে চীন। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এমন কিছু কার্যকলাপের প্রমাণ পেয়েছে যেখানে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সাইবার স্পাইংয়ের মাধ্যমে চীনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এই অভিযোগ এমন এক সময়ে এল যখন দুই দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণের প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। এই আক্রমণে চীনের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বেইজিংয়ের দাবি, এই সাইবার হামলাগুলো ছিল সুপরিকল্পিত এবং এর মূল উদ্দেশ্য ছিল চীনের প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা। তবে, তারা এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কোনো প্রমাণ জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি।
চীনের এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন অভিযোগের ফলে দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
এই পরিস্থিতিতে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ারও সম্ভবনা রয়েছে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। দুই দেশই একে অপরের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে, যার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সাইবার হামলার অভিযোগ সেই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাইবার নিরাপত্তা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক নির্ধারণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিভিন্ন দেশের সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলো এখন তাদের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে চাইছে, কারণ সাইবার হামলা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই করে না, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এটি মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য কিছু বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার এই বিরোধ বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানে প্রভাব ফেলতে পারে।
বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা—এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া, দেশের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা এখন সময়ের দাবি।
ভবিষ্যতে এই ঘটনার আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনের এই অভিযোগ অস্বীকার করে, তবে দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা