শিরোনাম: ন্যাপলাদের চোখে ভিন্নতা: শিশুদের নামকরণে প্রজন্মের বিভেদ
সন্তানের নামকরণের বিষয়টি সবসময়ই একটি স্পর্শকাতর বিষয়। বাবা-মায়ের কাছে যেমন এটি আনন্দের, তেমনই পরিবারের অন্য সদস্যদের, বিশেষ করে দাদা-দাদি বা নানা-নানির কাছেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি, শিশুদের নাম নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে প্রবীণ প্রজন্মের সদস্যদের মনোমালিন্যের একটি চিত্র উঠে এসেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক দাদু-দিদা তাদের নাতি-নাতনির নাম নিয়ে অসন্তুষ্ট। কারো কারো মতে, কিছু নাম “অসুন্দর”, “পুরোনো দিনের” অথবা “অদ্ভুত”।
গ্রানসনেট নামক একটি সংস্থার জরিপে জানা গেছে, প্রতি পাঁচ জন দাদুর মধ্যে একজনের বেশি তাদের নাতি-নাতনির নাম পছন্দ করেন না। তবে, তাদের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ এখনো সেই নামে আপত্তি জানান, আর ১৫ শতাংশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নামটির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন।
এই বিষয়ে অনেকেরই ভিন্নমত রয়েছে। কারো কারো মতে, শিশুদের নাম রাখার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। আবার অনেকের ধারণা, পরিবারের প্রবীণ সদস্যদেরও মতামত দেওয়ার অধিকার আছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬৯ শতাংশ প্রবীণ সদস্য জানিয়েছেন, তাদের জিজ্ঞাসা করা হলে, তাঁরা মতামত দিতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের নামকরণের ক্ষেত্রে এই প্রজন্মের রুচি এবং আগের প্রজন্মের রুচির মধ্যে একটি পার্থক্য দেখা যায়। আধুনিক বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের জন্য এমন নাম পছন্দ করেন যা হয়তো তাদের অভিভাবকদের কাছে অপরিচিত বা অপ্রত্যাশিত।
উদাহরণস্বরূপ, অনেকে হয়তো তাদের নাতির নাম ‘আয়শা’ রাখতে চান, যেখানে দাদি চান তার নাম হোক ‘ফাতেমা’। আবার এমনও হতে পারে, দাদা-দাদি তাদের নাতির জন্য ‘আয়ান’ নাম পছন্দ করছেন, কিন্তু বাবা-মা চান তাদের সন্তানের নাম হোক আরও চিরাচরিত কোনো নাম।
বর্তমানে, শিশুদের নামকরণের ক্ষেত্রে পরামর্শকের চাহিদাও বাড়ছে। নাম নির্বাচন বিষয়ক পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, যদিও এটা এখনো খুব ব্যাপক নয়।
কেউ কেউ মনে করেন, শিশুদের নামকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বাবা-মায়েরাই ভালো বোঝেন।
এই প্রজন্মের শিশুদের নাম নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের স্বাধীনতা দেখা যায়। তারা চান তাদের সন্তানের একটি বিশেষ ও স্বতন্ত্র নাম হোক।
কিন্তু প্রবীণ প্রজন্মের সদস্যরা, বিশেষ করে দাদা-দাদিরা, অনেক সময় এই ধরনের নামকরণে আপত্তি জানান। তাঁদের মতে, কিছু নাম হয়তো শ্রুতিমধুর নয়, অথবা তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তবে, এখানে মনে রাখতে হবে, পরিবারের শান্তি বজায় রাখতে উভয় পক্ষেরই নমনীয় হওয়া প্রয়োজন। শিশুদের নাম নিয়ে মতপার্থক্য হতেই পারে, কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে আসা সম্ভব।
কারণ, একটি সুন্দর নাম যেমন সন্তানের পরিচয়ের অংশ, তেমনই তা পরিবারের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান